৮
আজ কাজে যায়নি মালতী। শরীরটা ঠিক
যুতে নেই। কাল ফেরার সময় ট্রেন থেকে নেমে গোটা রাস্তাটা বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছিল, আজ
সকাল থেকে মাথা ভার, নাক দিয়ে জল ঝরছে, সারা গতরে ব্যথা। এইরকম ব্যথা হয়েছিল প্রথম
কাজ করতে যাওয়ার পরদিন সকালে। সেদিনও ঘুম থেকে উঠে সারা শরীরে ভীষণ বেদনা অনুভব
করেছিল মালতী। গোটা ডানহাত, বগল, কাঁধের চারপাশ, কোমর আর দাবনা দুটো মনে হচ্ছিল
যন্ত্রণায় ভেঙে যাচ্ছে। সেদিন ভেবেছিল কাজে বের হবে না, কিন্তু বিমলামাসি ডাকতে
এসে, জোর করে নিয়ে গিয়েছিল। বলেছিল এ হল অতিরিক্ত কাজের
জন্যে অনভ্যাসের ব্যথা, প্রথম প্রথম কদিন এমন হয়। ওই ব্যথা নিয়ে ঘরে শুয়ে থাকলে আরো বাড়বে। আজকে
কষ্ট হবে কাজ করতে, কিন্তু ব্যথার উপশম হবে তাড়াতাড়ি। সত্যি, সেদিন বিকেলে কাজ
সেরে ফেরার পরে তার গতরের ব্যথাটা ছিল, কিন্তু তেমন কিছু নয়।
কিন্তু আজ কাজে বেরোনোর সময় বিমলামাসি
তার শরীর খারাপ শুনে বলল, “বাদলার জলে একটু ঠান্ডা লেগেচে, শুয়ে থাক, ভাল হয়ে যাবে। তাছাড়া
মাজে মাজে
বাবুদের বাড়ি কামাই না দিলে, দাম থাকে না...।”
বিমলামাসি বেরিয়ে যাওয়ার পরে,
মালতী মুখটুক ধুয়ে এক গেলাস চা বানিয়ে বসল ঘরের দোরগোড়ায়। আজও আকাশ ভারি হয়ে আছে।
বৃষ্টি হচ্ছে না, কিন্তু শুরু হতে কতক্ষণ! দিন কয়েক আগের আর কালকের বর্ষাতে বিমলামাসির
ঘরের সামনের জমিটুকু সবুজ ফন্ফনে সতেজ আগাছায় ভরে উঠেছে।
তার স্বামী হলধর পোল্লের দূর কোন
এক সম্পর্কের মাসি হয় এই বিমলামাসি। অল্প বয়সে বিধবা। কমবয়সে এদিক
সেদিক নাকি বদনাম রটেছিল। তাই হলধর পোল্লে এক পাড়াতে থাকলেও এই মাসির খোঁজখবর তেমন
রাখত না। বিমলামাসিও বোনপোর মন বুঝে, গায়ে পড়ে বেশি মাখামাখি দেখাত না। তবে হলধরের
মৃত্যুর খবর পেয়ে যেভাবে দৌড়ে এসেছিল। এবং তারপর থেকে বুকে করে তাকে আর তার মেয়ে
ছবিকে যে ভাবে আগলে রেখেছে। সর্বদা সঠিক দিশা দেখিয়েছে। তাতে মালতী ভাবে, যৌবনের
এক আধটা ভুল মানুষের চরিত্রকে কিছুতেই পালটে দিতে পারে না। নিঃসন্তান, সঙ্গীহীন
মেয়েমানুষটা, তার
মতোই – কিংবা তার থেকেও বড়ো দুখী। তার তো তাও একটা অবলম্বন আছে, ছবি। কিন্তু বিমলামাসির?
কেউ নেই। বিমলামাসি, তাকে আর তার মেয়েকে সত্যি বড় ভালোবাসে।
বিমলামাসিই তাকে প্রস্তাব
দিয়েছিল, তাদের ভাড়ার বাসাটা ছেড়ে এইখানে চলে আসতে। ছবি নেই। মালতী বেরিয়ে যায় সেই
সক্কালবেলায়, ফেরে রাত্রে। কি দরকার মাস মাস বাসার ভাড়া গুণে? বিমলামাসির একটা ঘর
তো খালি পড়েই আছে, মালতী চলে এলে ঘরটারও সুরাহা হয়, আর মাস মাস বাসাভাড়ার টাকাটাও
সাশ্রয় হয়। মালতী ভেবে দেখেছিল, প্রস্তাবটা মন্দ নয়, বেশ ভালই। তার মনে একটু
কিন্তু কিন্তু ছিল, সে বিমলামাসিকে মাসে মাসে কিছু টাকা ভাড়া বাবদ ধরে দেবার কথা
বলেছিল, কিন্তু বিমলামাসি আমল দেয়নি। মালতী বার বার বলাতে উত্তর দিয়েছিল- -“তোর
যকন এতই সংকোচ, ও টাকাটা আমার নামে রেকারিনে ব্যাংকে ফেলে রাক, ছবির বে’তে ওটাই ধর
আমি ওকে দেলাম”।
এই ছয়-সাত বছরে মালতী এখন অনেকটাই থিতু।
মহাজনের পঞ্চাশ হাজার বেড়ে চলেছে। যদিও মালতীর নিজের রোজগারের অনেকটাই ব্যয় হয়ে
যায় নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিষে, ট্রেনে যাওয়া আসা, খাওয়া দাওয়া, জামা কাপড়, দায়-বিপদ
সারতে। তবে সবচেয়ে যেটা নিশ্চিন্তের কথা সেটা হচ্ছে ছবির মাইনে, ছবি এখন সাড়ে পাঁচ
হাজার পায়, আর তার পুরোটাই প্রায় সঞ্চয় হয়ে চলেছে ব্যাংকে। ছবির অন্য খরচ
মাস্টারদিদিই সব দিয়ে দেন। তেল, সাবান, মুখে মাখার ক্রিম-টিম সব। পুজোর সময় তো
বটেই, তা ছাড়াও জামা-কাপড়ও কিনে দেন দরকার মতো।
নিজের মেয়েকে যতো দেখছে, ততই অবাক
হচ্ছে মালতী। বিশ্বাসই হয় না, তার সেই ছোট্ট মেয়েটা কিভাবে এত তাড়াতাড়ি বড়ো হয়ে
উঠল, বিশাল বটবৃক্ষের মতো। মাঝে মাঝে মনে হয় তার মেয়েটা কি পাথর হয়ে গেছে? চরম
স্বার্থপর আর নিষ্ঠুর? তাদের এই লাইনে অন্যান্য কাজ করা মেয়েদের মতো? মালতী এত
দুঃখের মধ্যেও কিছুতেই ভুলতে পারে না, সে চাষী ঘরের মেয়ে। বেঁচে থাকার জন্যে প্রতি
নিয়ত লড়তে লড়তেও সে ভুলে যায়নি তার মূল্যবোধ – তার মায়া, মমতা আর আবেগ।
ছবি যেদিন প্রথম মিঠুদের বাড়িতে
কাজে লাগল, মালতী আশা করেছিল ছবি খুব কান্নাকাটি করবে। বাড়ি ফেরার জন্যে বায়না
করবে। ছবিকে সামলাবে কিভাবে সেই সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতেই মালতী সেদিন বিকেলে বিমলামাসির
সঙ্গে ওদের ফ্ল্যাটে গিয়েছিল। কিন্তু মেয়েকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল মালতী। কোন
কান্না নেই। মুখখানি একটু ম্লান ঠিকই, কিন্তু ঠোঁটের অদ্ভূত মায়াবী হাসিটুকু তার
চোখ এড়ায়নি। তবে কি ছবি তার পর হয়ে গেল? মায়ের ওপর তীব্র অভিমানে? বাবা মারা যাবার
কয়েকমাসের মধ্যেই বাপ-সোহাগী মেয়েকে ইস্কুল ছাড়িয়ে, নিজেদের ঘর-বাড়ি ছাড়িয়ে, পরের
ঘরে কাজে লাগানোর জন্যে? সেদিন ফেরার সময় সারাটা পথ, ঘরে ফিরে সারাটা রাত কেঁদেছিল
মালতী – “আমি কি জেনে শুনে সাধ করে তোরে কাজে লাগিয়েচি, মা রে? কি করব বল দিকি....”?
বিমলামাসি তাকে অনেক বুঝিয়েছিল –“মিঠু
প্রায় ওর সমবয়সী - বছর দুয়েকের বড়ো হয়তো, বন্ধুর মতো। মিঠুর মাও লোক খুব ভাল, তবে ওর বাপটা শুনেচি
খুব খিটকেল ধরনের - সন্দেহবাতিক মেনিমুখো ব্যাটাছেলে। কারোর সঙ্গেই তার বনে না। তা
ওর বাবা তো সারাটা দিন থাকেও না বাড়িতে। কাজেই ছবিমার যদি ওখানে মন বসেই যায়, তার
জন্যে এত দুক্কু করছিস কেন, বল দিকি মালতী”? মনকে বুঝিয়েছিল মালতী, সত্যি তাই যেন
হয়, তার সেই এক রত্তি মেয়েটা যেন
মায়া মমতা সব খুইয়ে স্বার্থপর হয়ে পাথর না বনে যায়।
মাস্টারদিদির বাড়িতেই মালতী প্রথম
কাজে লেগেছিল, ঘরদোর মোছা, থালা-বাসন ধোওয়া। মাস্টারদিদি মানুষ ভাল। শান্ত মানুষ।
কোন রাগারাগি, চেঁচামেচি নেই। তবে বড় দুঃখী। মালতী ভাবে নানান মানুষের নানান দুঃখ।
তার নিজের একরকম দুঃখ। মিঠুর মায়ের একরকম দুঃখ। আবার দেখ, এই মাস্টারদিদি, কত বড়
ইস্কুলে কত কত মেয়েকে ন্যাকাপড়া শেকায়, তারও কি না দুঃখ? অমন সোনার মতো দেখতে
একমাত্র ছেলে, সে কেমন যেন ব্যাঁকাট্যারা, অষ্টাবক্র। কথা বলতে পারে না। চলতে পারে না।
বিছানায় উঠে বসতে পারে না। এক গেলাস জল খাবারও তার সাধ্যি নেই। মাস্টারদিদি
মালতীকে অনেকবারই বলেছিল একটা ভাল মেয়ে দেখে দেবার জন্যে, যে সারাক্ষণ ও বাড়িতেই
থাকবে আর ওঁর ছেলে বিট্টুর দেখাশোনা করবে। ছবির কথা যে মালতীর মনে হয়নি তা নয়,
কিন্তু সে কথা মনে স্থান দেয়নি মালতী। কারণ ছবি তার মিঠুদিদির সঙ্গে ভালোই আছে।
তাছাড়া তার মনে হয়েছিল, এই বাড়িতে থেকে সারাক্ষণ ওই ছেলের সেবা করতে করতে আর তার
হাগা-মোতা সামলাতে সামলাতে, তার ছবির মনটাও পঙ্গু হয়ে যেতে পারে। মালতী কোনভাবেই চায়
না, তার ছবি সারাটা জীবন পরের বাড়ি খেটে খাক। একটু টাকাকড়ি জমলেই, ভালো চাকরি-বাকরি করা ছেলে দেখে ছবির
বিয়ে দিয়ে দেবে মালতী। ব্যস, তারপর ছবি আর সব ছেড়ে নিজের সংসার করুক গুছিয়ে।
যেমনটা মালতী নিজে পেয়েছিল, কিন্তু ভাগ্য তাকে ভোগ করতে দেয়নি!
মালতী ভেবেছিল একরকম, কিন্তু হয়ে
গেল অন্যরকম। মিঠুর সঙ্গে এক বিকেলে ছবি গিয়ে কি জাদু দেখাল কে জানে, মাস্টারদিদি
একদম নাছোড় হয়ে গেলেন। মাস্টারদিদি প্রথমে কথা বলেছিল মালতীর সঙ্গেই। মালতী এড়িয়ে
গিয়েছিল। মাস্টারদিদি হাল ছাড়েননি, নিজে গিয়ে মিঠুর মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন।
মিঠুর মা নিমরাজি হয়েছিলেন। মালতীর মতোই তাঁরও দৃঢ় ধারণা ছিল, তাঁর সঙ্গে এবং
বিশেষ করে মিঠুর সঙ্গে ছবির যা সম্পর্ক তাতে ছবি নিশ্চয়ই যেতে চাইবে না।
কিন্তু ছবির কাছে কথাটা যখন বলা
হল, সবাইকে অবাক করে দিল ছবি, এক কথায় রাজি হয়ে গেল কাজটা করতে। সে কি শুধু টাকার
জন্যে? মিঠুদের বাড়িতে ছবির মাইনে ছিল বারোশ টাকা, থাকা-খাওয়া ফ্রি আর পুজোয় জামা
কাপড়। মাস্টারদিদি বলেছিল সাড়ে তিন হাজার, থাকা-খাওয়া, তেল সাবান ফ্রি, পুজোয়
জামাকাপড়। বাড়তি
তেইশশ’
টাকার জন্যেই কি ছবি এমনটা করল? মাসে মাসে এতগুলো টাকা বেড়ে যাওয়া তাদের জীবনে
ভীষণ বড় ব্যাপার, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। তবু মালতীর পছন্দ হয়নি ব্যাপারটা। ছবি
টাকাটাই দেখল? একবারও ভাবল না, মিঠু আর মিঠুর মায়ের ভালোবাসার কথা? একবারও ভাবল
না, তার কাজটা কি হবে, একটা অসুস্থ – বিকলাঙ্গ ছেলের সর্বদা সেবা করে যাওয়া সারাটা
দিন। কোন সঙ্গী নেই - সাথী নেই, কোন বৈচিত্র্য নেই, একঘেয়ে বিরক্তিকর কাজ।
ছবির এই সিদ্ধান্ত মালতীকে ভীষণ
দ্বিধায় রেখেছে আজও। একদিকে বাড়তি এতগুলি টাকার সঞ্চয়, তাদের দিয়েছে বাড়তি
নিরাপত্তা। সেদিক থেকে ভাবলে ছবি হয়তো ঠিক করেছে। কিন্তু অন্যদিকে মিঠুদের
আন্তরিক ভালোবাসা আর সুস্থ জীবন ছেড়ে, অসুস্থ জীবনের সঙ্গে জুড়ে যাওয়া, মালতীর মনে
হয় মিঠুদের সঙ্গে ভীষণ বড়ো অবিশ্বাসের কাজ হয়েছে এটা। মিঠু এতদিন পরে আজও, প্রায়ই আসে
ছবির কাছে। বেশ কয়েকবার দেখাও হয়েছে মালতীর সঙ্গে মাস্টারদিদির বাড়িতে। সে তো শুধু
ভালোবাসার টানেই না কি? ছবি কি কিছুটা হলেও অকৃতজ্ঞ নয়, মিঠুদের কাছে?
ঘরের ভেতর থেকে মোবাইলটা বেজে
উঠল। ফোনটা কিনে দিয়েছিল ছবি। ফুরিয়ে যাওয়া চায়ের গ্লাসের কানায় বসে থাকা মাছিদের
তাড়িয়ে মালতী উঠল। মেঘলা দিনে বেলা বোঝা যাচ্ছে না ঠিকই, কিন্তু অনেকটা সময় গড়িয়ে
গেছে আকাশ-পাতাল ভাবনায়। ফোনটা হাতে নিয়ে, পর্দার আঁকিবুকি দেখে সে বুঝল ছবির ফোন,
সবুজ সুইচ টিপে কানে নিল ফোনটা, “বল”।
“মা, কোথায় তুমি? আজ কাজে আসনি”?
“না রে সকালে শরীর খারাপ লাগতেসিল
– তাই আর যাইনি”।
“কি হয়েছে? জ্বর”?
“জ্বর নয়, তবে ওরকমই, জ্বর-জ্বর
ভাব, মাথা ভার, গায়ে ব্যাতা”।
“তুমি দিদুর সাথে চলে এলে না কেন,
আমার কাছে? বিশ্রাম হতো। দরকার হলে ডাক্তারও দেখিয়ে নেওয়া যেত”।
“ধুর, তেমন
কিছু নয় রে, আজ একটু আরাম করলেই সেরে যাবে”।
“কিছু খেয়েছ, সকাল থেকে?
রান্নাবান্না কিছু করেছ”?
“চা খেয়েচি। আর এই তো রান্না
চাপাব ...”।
“আমি জানি তো। এখন কটা বাজছে বলো
তো, পৌনে একটা। সকাল থেকে কিছু খাওনি, এখনো রান্না করোনি...নিশ্চই দরজায় বসে আবোল-তাবোল
ভাবছিলে। এর জন্যেই তোমাকে বলছিলাম, মা, তুমি আমার কাছে চলে এলে না কেন? না খেলে
শরীর খারাপ তো আরো বাড়বে ...মা, শুনচ?
“শুনচি রে, মা শুনচি। তুই কি
আমাকে দেখতে পাচ্চিস নাকি, বলতো? এতক্ষণ কি করচি না করচি সব তুই বুজে ফেললি...”
“আমি কি তোমায় চিনি না ভাবচো? একা
একা ঘরে তুমি কী করবে আমি জানি না? শরীর খারাপ বলে চুপচাপ শুয়ে কাটাবে তুমি? ওসব
কতা রাকো, তুমি এখন উটে যা হোক কিচু একটু ফুটিয়ে নাও। আবার পুকুরে নাইতে যেও না
যেন। বাদলার জলে শরীর আরো ধরে নেবে। বালতির তোলা জলে গাটা ধুয়ে নিও...এই অবেলায়
মাতা ভিজিও না মোটেই, চুল শুকোবে না, বিপদ আরো বাড়বে”
“বেশি বকিস না, ছবি। অবাক করলি
বটে, আমি তোকে পেটে ধরেছিলাম, না তুই আমাকে? এমন করচিস, জ্বর যেন আর কারো হয় না।
তোর সব কাজ হয়ে গেচে? খাওয়াদাওয়া সেরেচিস”?
“হুঁ, কাজ সেরে, বিট্টুকে খাবার
খাইয়ে এই ওষুধ খাওয়ালাম, ও ঘুমোচ্চে। আজ তুমি এলে না দেকে, তোমাকে ফোন করলাম।
তোমার জন্যে একটু সুজির হালুয়া আর হরলিক্স বানিয়ে রেকেচিলাম, সেটা আমাকেই একন
গিলতে হবে, দুপুরে ওই খেয়ে নোব, ব্যস। কাল কিন্তু শরীর খারাপ লাগলেও চলে আসবে
দিদুর সঙ্গে। বুজেচ? একন যাও যা বললাম করো, উটে কিচু মুকে দাও”।
“আমাকে উপদেশ ঝাড়ছিস আর নিজে খাবি
সুজি আর হরলিক, সোমত্ত মেয়ে ওই খেয়ে তোর পেট পুরবে?
“আচ্ছা, আচ্ছা, এ পোড়া পেট কিসে
পুরবে আমার চে তুমি না হয় ঢের বেশীই জান, আমি কিন্তু আবার ফোন করব, আর মিচে কতা
বললে ঠিক ধরে ফেলব...হাসল ছবি...একন রাকচি”।
মালতীর ঠোঁটে হাল্কা হাসি, দুচোখে
মায়ার আলো, মালতীর খুব ইচ্ছে হচ্ছে এই মূহুর্তে ছবির চিবুক ছুঁয়ে চুমু খেতে, মালতীর
চোখে জল ভরে উঠল। মালতী শব্দহীন মোবাইলের দিকে তাকিয়ে রইল কিছুক্ষণ। তারপর
ফোন রেখে দীর্ঘশ্বাস ফেলে উঠে পড়ল – চান খাওয়া না করলে এই মেয়ে তাকে ছাড়বে না।
চলবে...
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন