বুধবার, ২৩ জুলাই, ২০২৫

কঠোপনিষদ - ১/১

 

সূচনা

 এই উপনিষদটি কৃষ্ণযজুর্বেদীয় তৈত্তিরীয় শাখার কঠ বা কাঠক ব্রাহ্মণের অন্তর্গত বলে কঠোপনিষদ নামে পরিচিত। এই উপনিষদে যম ও নচিকেতার আখ্যান এবং তাদের কথোপকথনের মাধ্যমে ব্রহ্মবিদ্যার তত্ত্ব বর্ণনা করা হয়েছে। নচিকেতার এই উপাখ্যানটি অত্যন্ত প্রাচীন, ঋগ্‌বেদে এবং তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণেও নচিকেতার এই উপাখ্যানটির একটু অন্যভাবে উল্লেখ আছে।

কঠোপনষিদের প্রথম যে ভাষ্যটি পাওয়া যায়, সেটি আচার্য শংকরের। তিনিই এই উপনিষদকে দুটি অধ্যায়ে এবং প্রতি অধ্যায়কে তিনটি বল্লীতে বিভক্ত করেন। পরবর্তী কালে মধ্বাচার্য এটিকে অধ্যায়ে ভাগ না করে, ছয়টি বল্লীতে বিভক্ত করেছিলেন। ১৮১৭ সালে রাজা রামমোহন রায় এই উপনিষদের প্রথম বাংলা অনুবাদ করেন। পণ্ডিতেরা এই উপনিষদটিকে সেরা উপনিষদগুলির মধ্যে অন্যতম মনে করেন।

“উত্তিষ্ঠত জাগ্রত

প্রাপ্য বরান্‌ নিবোধত।

ক্ষুরস্য ধারা নিশিতা দুরত্যয়া

দুর্গং পথস্তৎ কবয়ো বদন্তি”।। (১/৩/১৪) 

উপরের শ্লোকটি স্বামী বিবেকানন্দর অত্যন্ত প্রিয় – তাঁর এই বাণীই সেসময় এবং আজও বহু মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে এবং করে চলেছে। শ্লোকটি এই উপনিষদের অন্তর্গত। 

  প্রসঙ্গতঃ W. Somerset Maugham-এর  ১৯৪৪ সালে লেখা বিখ্যাত উপন্যাস The Razor's Edge -এর নামটি এই শ্লোকের "ক্ষুরস্য ধারা" শব্দদুটির অনুবাদ। এই উপন্যাসের নায়ক ছিলেন একজন যুদ্ধ-বিমান চালক, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বীভৎসতা নিজের চোখে দেখে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন এবং উপনিষদের মধ্যে শান্তি ও নতুন এক জীবনের সন্ধান করতে থাকেন। এই উপন্যাসটি নিয়ে হলিউডে সিনেমাও হয়েছে।    

       

 শান্তিপাঠ

 

ওঁ সহ নাববতু, সহ নৌ ভুনক্তু, সহ বীর্যং করবাবহৈ তেজস্বি নাবধীতমস্তু,

মা বিদ্বিষাবহৈ।।

ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।

ওঁ সহ নৌ অবতু, সহ নৌ ভুনক্তু, সহ বীর্যং করবাবহৈ তেজস্বি নৌ অধীতম্‌ অস্তু,

মা বিদ্বিষাবহৈ।।

ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।

আমাদের দুজনকে তিনি সমভাবে রক্ষা করুন, দুজনকেই সমভাবে (জ্ঞান) লাভ করান, আমাদের উভয়কেই (জ্ঞানলাভের) উপযুক্ত করে তুলুন। আমাদের উভয়ের কাছেই লব্ধজ্ঞান যেন তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। (আমরা যেন পরষ্পরের প্রতি) বিদ্বেষ না করি।  ওঁ শান্তি, সকল বিঘ্নের শান্তি হোক।

 

প্রথম অধ্যায়

প্রথম বল্লী

ওঁ উশন্‌ হ বৈ বাজশ্রবসঃ সর্ববেদসং দদৌ।

তস্য হ নচিকেতা নাম পুত্র আস।। ১/১/১

ওঁ উশন্‌ হ বৈ বাজশ্রবসঃ সর্ববেদসং দদৌ।

তস্য হ নচিকেতা নাম পুত্র আস।। ১/১/১

বাজশ্রবার পুত্র যজ্ঞে ফললাভের জন্য সর্বস্ব দান করেছিলেন। তাঁর এক পুত্র ছিল, নাম নচিকেতা। [বাজ মানে অন্ন, শ্রবঃ মানে যশ - অন্নদান করে যিনি বিখ্যাত হয়েছিলেন, সেই বাজশ্রব-র বংশধরেরা বাজশ্রবা।]

   

তং হ কুমারং সন্তং দক্ষিণাসু নীয়মানাসু

শ্রদ্ধাবিবেশ সোঽমন্যত।। ১/১/২

তং হ কুমারং সন্তং দক্ষিণাসু নীয়মানাসু

শ্রদ্ধা আবিবেশ সঃ অমন্যত।। ১/১/২

যজ্ঞের দক্ষিণা(গবাদি প্রাণী) সমূহ যখন যজ্ঞস্থলে আনা হচ্ছিল, পিতার মঙ্গল চিন্তা করে, বালক নচিকেতার মনে হল,

 

পীতোদকা জগ্ধতৃণা দুগ্ধদোহা নিরিন্দ্রিয়াঃ।

অনন্দা নাম তে লোকাস্তান্‌ স গচ্ছতি তা দদৎ।। ১/১/৩

পীত-উদকাঃ জগ্ধ-তৃণাঃ দুগ্ধ-দোহাঃ নিঃ-ইন্দ্রিয়াঃ।

অনন্দাঃ নাম তে লোকাঃ তান্‌ স গচ্ছতি তাঃ দদৎ।। ১/১/৩

জীবনের শেষ জল পান করে নিয়েছে, শেষ ঘাস-পাতা খেয়ে ফেলেছে, দুধ দেওয়ারও আর ক্ষমতা নেই, নেই সন্তান ধারণের ক্ষমতাও, এমন গাভীসমূহ যিনি দান করেন, তাঁকে দুঃখময় লোকে যেতে হয়।

 

স হোবাচ পিতরং তত কস্মৈ মাং দাস্যসীতি।

দ্বিতীয়ং তৃতীয়ং তং হোবাচ মৃত্যবে ত্বা দদামীতি।। ১/১/৪

সঃ হ উবাচ পিতরং তত কস্মৈ মাং দাস্যসি ইতি।

দ্বিতীয়ং তৃতীয়ং তং হ উবাচ মৃত্যবে ত্বা দদামি ইতি।। ১/১/৪

তিনি পিতাকে বললেন, “পিতা, আপনি আমাকে কার কাছে দান করবেন?” (পিতার উত্তর না পেয়ে) তিনি দ্বিতীয় বার, তৃতীয় বার একই প্রশ্ন করলেন। তখন পিতা বললেন, “তোমাকে আমি মৃত্যু (যম)-র কাছে দান করলাম”।


বহূনামেমি প্রথমো বহূনামেমি মধ্যমঃ।

কিং স্বিদ্‌ যমস্য কর্তব্যং যন্ময়াদ্য করিষ্যতি।। ১/১/৫


বহূনাম্‌ এমি প্রথমঃ বহূনাম্‌ এমি মধ্যমঃ।

কিং স্বিদ্‌ যমস্য কর্তব্যং যৎ ময়া অদ্য করিষ্যতি।। ১/১/৫

(নচিকেতা চিন্তা করলেন) “অনেকের মধ্যে আমি প্রথমে থাকি, অনেকের মধ্যে আমি মাঝারি, (কিন্তু কখনও অধম তো নই! সুতরাং) যমের এমন কী প্রয়োজন পড়ল যে, আজ পিতা আমাকেই তাঁর কাছে দান করলেন?”

 

অনুপশ্য যথা পূর্বে প্রতিপশ্য তথাঽপরে।

সস্যমিব মর্ত্যঃ পচ্যতে সস্যমিবাজায়তে পুনঃ।। ১/১/৬

অনুপশ্য যথা পূর্বে প্রতিপশ্য তথা অপরে।

সস্যম্‌ ইব মর্ত্যঃ পচ্যতে সস্যম্‌ ইব আজায়তে পুনঃ।। ১/১/৬

(দুর্বল হয়ে পিতা পাছে সত্যভ্রষ্ট হন, তাই নচিকেতা বললেন,) “হে পিতা, আমাদের পূর্বপুরুষদের (সত্যনিষ্ঠার) কথা চিন্তা করুন, অন্যান্য (সত্যনিষ্ঠ)-দের কথাও চিন্তা করুন। মানুষের জীবন শস্যের মতোই একবার জীর্ণ হয় আবার জন্ম নেয়” (অতএব অনিত্য এই সংসারে সত্যভ্রষ্ট হওয়া উচিৎ নয়)। 

 

বৈশ্বানরঃ প্রবিশত্যতিথির্ব্রাহ্মণো গৃহান্‌।

তস্যৈতাং শান্তিং কুর্বন্তি হর বৈবস্বতোদকম্‌।। ১/১/৭

বৈশ্বানরঃ প্রবিশতি অতিথিঃ ব্রাহ্মণঃ গৃহান্‌।

তস্য এতাম্‌ শান্তিং কুর্বন্তি হর বৈবস্বত উদকম্‌।। ১/১/৭

(যমরাজ তিন রাত্রি ঘরে ছিলেন না, তিনি ফিরলে তাঁর আত্মীয়রা বললেন,) “ব্রাহ্মণ অতিথি অগ্নির মতোই গৃহে প্রবেশ করেন। গৃহস্থ তাঁর (পথশ্রম ও ক্লান্তির) শান্তির ব্যবস্থা করেন। হে যমরাজ, তাঁর পা ধোওয়ার জল আন।   

 

আশাপ্রতীক্ষে সঙ্গতং সুনৃতাং

চেষ্টাপূর্তে পুত্রপশুংশ্চ সর্বান্‌।

এতদ্বৃঙ্‌ক্তে পুরুষস্যাল্পমেধসো

যস্যানশ্নন্‌ বসতি ব্রাহ্মণো গৃহে।। ১/১/৮

আশাপ্রতীক্ষে সঙ্গতং সুনৃতাং

চ ইষ্টাপূর্তে পুত্রপশুন্‌ চ সর্বান্‌।

এতৎ বৃঙ্‌ক্তে পুরুষস্য অল্পমেধসঃ

যস্য অনশ্নন্‌ বসতি ব্রাহ্মণো গৃহে।। ১/১/৮

যার গৃহে ব্রাহ্মণ অনাহারে বাস করেন, সেই অল্পবুদ্ধি মানুষের (শুভ ফলের) আশা, প্রতীক্ষা, সাধু সঙ্গলাভের সুফল, প্রিয়বাক্য বলার ফল, যজ্ঞে পূর্ণ হওয়া ইষ্ট, পুত্র, গবাদি পশু – সকলই বিনষ্ট হয়”।


তিস্রো রাত্রীর্যদবাৎসীর্গৃহে

মেঽনশ্নন্‌ ব্রহ্মন্নতিথির্নমস্যঃ।

নমস্তেঽস্তু ব্রহ্মন্‌ স্বস্তি মেঽস্তু

তস্মাৎ প্রতি ত্রীন বরান্‌ বৃণীষ্ব।। ১/১/৯

তিস্রঃ রাত্রীঃ যৎ অবাৎসীঃ গৃহে

মে অনশ্নন্‌ ব্রহ্মন্‌ অতিথিঃ নমস্যঃ।

নমঃ তে অস্তু ব্রহ্মন্‌ স্বস্তি মে অস্তু

তস্মাৎ প্রতি ত্রীন বরান্‌ বৃণীষ্ব।। ১/১/৯

(নচিকেতাকে অভ্যর্থনা করে যমরাজ বললেন) “হে ব্রাহ্মণ, তুমি নমস্য অতিথি, তুমি অনাহারে তিন রাত্রি আমার গৃহে যেহেতু বাস করেছো, তার জন্যে তোমাকে নমস্কার, এখন ওই তিন রাত্রির জন্যে তুমি তিনটি বর প্রার্থনা কর এবং আমার মঙ্গল হোক”।

 

শান্তসংকল্পঃ সুমনা যথা

স্যাদবীতমন্যুর্গৌতমো মাঽভি মৃত্যো।

তৎপ্রসৃষ্টং মাঽভিবদেৎ প্রতীত

এতৎ ত্রয়াণাং প্রথমং বরং বৃণে।। ১/১/১০

শান্তসংকল্পঃ সুমনা যথা

স্যাৎ বীত-মন্যুঃ গৌতমঃ মা অভি মৃত্যো।

তৎপ্রসৃষ্টং মা অভিবদেৎ প্রতীত

এতৎ ত্রয়াণাং প্রথমং বরং বৃণে।। ১/১/১০

(নচিকেতা বললেন) “হে মৃত্যু, (আমার পিতা) গৌতম যেন আমার প্রতি উৎকণ্ঠাহীন, প্রসন্নমনা এবং বিগতক্রোধ হন। আপনার এখান থেকে মুক্ত হবার পর পিতা আমায় যেন চিনতে পারেন এবং সাদরে গ্রহণ করেন। তিনটির মধ্যে এইটি আমার প্রথম বর”।

[সাধারণ ভাবে যমের গৃহে যায় মৃত মানুষ, অর্থাৎ প্রেত - প্রেতের সঙ্গে মর্ত্যের জীবিত মানুষের কোন পরিচয় থাকে না। নচিকেতা বর চাইলেন, পিতার সঙ্গে আমার যেন সেই সম্পর্ক না হয়]     

 

যথা পুরস্তাদ্ভবিতা প্রতীত

ঔদ্দালকিরারুণির্মৎপ্রসৃষ্টঃ।

সুখং রাত্রীঃ শয়িতা বীতমন্যুস্ত্বাং

দদৃশিবান্‌ মৃত্যুমুখাৎ প্রমুক্তম্‌।। ১/১/১১

যথা পুরস্তাৎ ভবিতা প্রতীতঃ

ঔদ্দালকিঃ আরুণিঃ মৎ-প্রসৃষ্টঃ

সুখং রাত্রীঃ শয়িতা বীত-মন্যুঃ ত্বাং

দদৃশিবান্‌ মৃত্যুমুখাৎ প্রমুক্তম্‌।। ১/১/১১

(যমরাজ বললেন) “ঔদ্দালকি আরুণি তোমার প্রতি আগে যেমন ছিলেন, তোমাকে চিনতে পেরে সেরকমই থাকবেন। তোমাকে মৃত্যুমুখ থেকে বিমুক্ত দেখেও, আমার ইচ্ছায় ক্রোধহীন হয়ে আরো অনেক রাত্রি তিনি সুখনিদ্রায় কাটাবেন”।

[নচিকেতার পিতা গৌতম, ঋষি উদ্দালক ও অরুণের বংশধর, তাই যমরাজ তাঁকে ঔদ্দালকি এবং আরুণি সম্বোধন করেছেন। সকলেই বাজশ্রবা বংশের ঋষি।]   

 

স্বর্গে লোকে ন ভয়ং কিঞ্চনাস্তি

ন তত্র ত্বং ন জরয়া বিভেতি।

উভে তীর্ত্বাঽশনায়াপিপাসে

শোকাতিগো মোদতে স্বর্গলোকে।। ১/১/১২

স্বর্গে লোকে ন ভয়ং কিঞ্চন অস্তি

ন তত্র ত্বং ন জরয়া বিভেতি।

উভে তীর্ত্বা অশনায়া-পিপাসে

শোকাতিগঃ মোদতে স্বর্গলোকে।। ১/১/১২

(নচিকেতা বললেন) “স্বর্গলোকে এতটুকুও ভয় নেই। সেখানে আপনি (মৃত্যু) নেই, জরাগ্রস্ত হবার ভয় নেই। ক্ষুধা ও তৃষ্ণা উভয়কেই অতিক্রম করে, শোকের অনুভব-মুক্ত হয়ে, সকলে স্বর্গে আনন্দ ভোগ করে”।

 

স ত্বমগ্নিং স্বর্গ্যমধ্যেষি মৃত্যো

প্রব্রূহি ত্বং শ্রদ্দধানায় মহ্যম্‌।

স্বর্গলোকা অমৃতত্বং ভজন্ত

এতদ্‌ দ্বিতীয়েন বৃণে বরেণ।। ১/১/১৩

স ত্বম্‌ অগ্নিং স্বর্গ্যম্‌ অধ্যেষি মৃত্যো

প্রব্রূহি ত্বং শ্রদ্দধানায় মহ্যম্‌।

স্বর্গলোকা অমৃতত্বং ভজন্ত

এতৎ দ্বিতীয়েন বৃণে বরেণ।। ১/১/১৩

   হে মৃত্যু, স্বর্গকামী মানুষেরা অগ্নিবিদ্যার তপস্যা করে যে ভাবে স্বর্গ এবং অমরত্ব লাভ করে, সে বিষয় আপনার জানা আছে। শ্রদ্ধাবান আমাকে আপনি সেই বিষয় বলুন, এই আমার প্রার্থিত দ্বিতীয় বর”।    

 

প্র তে ব্রবীমি তদু মে নিবোধ

স্বর্গ্যমগ্নিং নচিকেতঃ প্রজানন্‌।

অনন্তলোকাপ্তিমথো প্রতিষ্ঠাং

বিদ্ধি ত্বমেতং নিহিতং গুহায়াম্‌।। ১/১/১৪

প্র তে ব্রবীমি তৎ উ মে নিবোধ

স্বর্গ্যম্‌ অগ্নিং নচিকেতঃ প্রজানন্‌।

অনন্তলোকাপ্তিম্‌ অথো প্রতিষ্ঠাম্‌

বিদ্ধি ত্বম্‌ এতম্‌ নিহিতম্‌ গুহায়াম্‌।। ১/১/১৪

(যমরাজ বললেন) “হে নচিকেতা, স্বর্গলাভের জন্য অগ্নি বিদ্যার বিষয় আমি ভালোভাবেই জানি। মন দিয়ে শোনো, আমি বলছি। জেনে রাখো, এই বিষয় অনন্তলোক লাভের উপায়, জগতের আশ্রয় এবং বিদ্বানদের অন্তরে প্রতিষ্ঠিত”।   

 

লোকাদিমগ্নিং তমুবাচ তস্মৈ

যা ইষ্টকা যাবতীর্বা যথা বা।

স চাপি তৎ প্রত্যবদদ্‌ যথোক্তমথাস্য

মৃত্যুঃ পুনরেবাহ তুষ্টঃ।। ১/১/১৫

লোকাদিম্‌ অগ্নিং তম্‌ উবাচ তস্মৈ

যা ইষ্টকা যাবতীঃ বা যথা বা।

সঃ চ অপি তৎ প্রত্যবদৎ যথা উক্তম্‌

অথ অস্য মৃত্যুঃ পুনঃ এব আহ তুষ্টঃ।। ১/১/১৫

(যমরাজ নচিকেতাকে) সৃষ্টির আদিতে উপস্থিত অগ্নির বিষয়ে বললেন, কতগুলি ইঁট সংগ্রহ (যজ্ঞবেদী নির্মাণের জন্য) করে অন্যান্য ক্রিয়া (সমিৎসজ্জা, অগ্নিচয়ন, অগ্নিস্থাপন ইত্যাদি) কীভাবে করতে হয়। একনিষ্ঠ নচিকেতাও যমরাজের সকল কথা মন দিয়ে শুনে, তিনি যেমন বলেছিলেন, তেমনই পুনরুক্তি করলেন। নচিকেতার এই একাগ্রতায় যমরাজ আবার সন্তুষ্ট হয়ে বললেন।

  

তমব্রবীৎ প্রীয়মাণো মহাত্মা

বরং তবেহাদ্য দদামি ভূয়ঃ।

তবৈব নাম্না ভবিতাঽয়মগ্নিঃ

সৃঙ্কাং চেমামনেকরূপাং গৃহাণ।। ১/১/১৬

তম্‌ অব্রবীৎ প্রীয়মাণো মহাত্মা

বরং তব ইহ অদ্য দদামি ভূয়ঃ।

তব এব নাম্না ভবিতা অয়ম্‌ অগ্নিঃ

সৃঙ্কাম্‌ চ ইমাম্‌ অনেকরূপাং গৃহাণ।। ১/১/১৬

মহাত্মা (যমরাজ) প্রীত হয়ে তাঁকে বললেন, “আজ আরেকটি বর আমি তোমাকে দান করছি। এই অগ্নি তোমার নামেই প্রসিদ্ধ হবে, আর বহু বর্ণময় এই মালাও গ্রহণ করো”।

[“সৃঙ্কা” শব্দের এক অর্থ মালা, অন্য অর্থ শাস্ত্রসিদ্ধ কর্মবিজ্ঞান, যে কর্মজ্ঞানের-মালা দিয়ে পরমমঙ্গল লাভ করা যায়।]    

 

ত্রিণাচিকেতস্ত্রিভিরেত্য সন্ধিং

ত্রিকর্মকৃৎ তরতি জন্মমৃত্যু।

ব্রহ্মজজ্ঞং দেবমীড্যং বিদিত্বা

নিচায্যেমাং শান্তিমত্যন্তমেতি।। ১/১/১৭

ত্রিণাচিকেতঃ ত্রিভিঃ এত্য সন্ধিম্‌

ত্রিকর্মকৃৎ তরতি জন্মমৃত্যু।

ব্রহ্মজ-জ্ঞম্‌ দেবম্‌ ঈড্যং বিদিত্বা

নিচায্য ইমাম্‌ শান্তিম্‌ অত্যন্তম্‌ এতি।। ১/১/১৭

“তিনজনের (মাতা, পিতা ও আচার্য) সঙ্গে উপদেশ লাভ করে, যিনি তিনবার নাচিকেত অগ্নি চয়ন করবেন এবং তিন-কর্মের অনুষ্ঠান করবেন, তিনি জন্ম-মৃত্যুকে অতিক্রম করবেন। তিনি ব্রহ্ম থেকে সৃষ্টি হওয়া পূজনীয় এবং সর্বপ্রকাশশীল জ্ঞান আত্মরূপে উপলব্ধি করে পরমা শান্তি লাভ করবেন”

[শৈশবে মাতার, বাল্যে পিতার এবং উপনয়নের পর আচার্যের সঙ্গে থেকে যে উপদেশ লাভ করা যায়।]

 

ত্রিণাচিকেতস্ত্রয়মেতদ্‌ বিদিত্বা

য এবং বিদ্বাংশ্চিনুতে নাচিকেতম্‌।

স মৃত্যুপাশান্‌ পুরতঃ প্রণোদ্য

শোকাতিগো মোদতে স্বর্গলোকে।। ১/১/১৮

ত্রিণাচিকেতঃ ত্রয়ম্‌ এতৎ বিদিত্বা

যঃ এবম্‌ বিদ্বান্‌ চিনুতে নাচিকেতম্‌।

সঃ মৃত্যুপাশান্‌ পুরতঃ প্রণোদ্য

শোকাতিগঃ মোদতে স্বর্গলোকে।। ১/১/১৮

“যিনি এই তিন (সমিৎসজ্জা, অগ্নিচয়ন, অগ্নিস্থাপন) জেনে, তিনবার নাচিকেত অগ্নি চয়ন করেন এবং নাচিকেত অগ্নির ধ্যান করেন, তিনি শরীরত্যাগের আগেই মৃত্যুর বন্ধন দূর করেন এবং দুঃখ-শোকের ঊর্ধে স্বর্গলোকের আনন্দ উপভোগ করেন” 

 

এষ তেঽগ্নির্নচিকেতঃ স্বর্গ্যো

যমবৃণীথা দ্বিতীয়েন বরেণ।

এতমগ্নিং তবৈব প্রবক্ষ্যন্তি

জনাসস্তৃতীয়ং বরং নচিকেতো বৃণীষ্ব।। ১/১/১৯

এষ তে অগ্নিঃ নচিকেতঃ স্বর্গ্যঃ

যম্‌ অবৃণীথাঃ দ্বিতীয়েন বরেণ।

এতম্‌ অগ্নিং তব এব প্রবক্ষ্যন্তি

জনাসঃ তৃতীয়ং বরং নচিকেতঃ বৃণীষ্ব।। ১/১/১৯

“হে নচিকেতা, তুমি দ্বিতীয় বরে যা প্রার্থনা করেছিলে, স্বর্গলাভের উপায়স্বরূপ যে অগ্নিবিষয়ের কথা তোমাকে বললাম, তোমার নামেই লোক সেই অগ্নির নাম বলবে। এখন তোমার তৃতীয় বর প্রার্থনা করো”।

 

যেয়ং প্রেতে বিচিকিৎসা মনুষ্যে

অস্তীত্যেকে নায়মস্তীতি চৈকে।

এতদ্বিদ্যামনুশিষ্টস্ত্বয়াঽহং

বরাণামেষ বরস্তৃতীয়ঃ।। ১/১/২০

যা ইয়ং প্রেতে বিচিকিৎসা মনুষ্যে

অস্তি ইতি একে ন অয়ম্‌ অস্তি ইতি চ একে।

এতৎ বিদ্যাম্‌ অনুশিষ্টঃ ত্বয়া অহং

বরাণাম্‌ এষঃ বরঃ তৃতীয়ঃ।। ১/১/২০

(নচিকেতা বললেন) “মৃত্যু হলেই মানুষের (মনে) এই যে সন্দেহ উদয় হয়, কেউ বলেন (পরলোকগত আত্মা) “আছে”, কেউ কেউ বলেন “নেই”, আপনার উপদেশ থেকে আমি এই বিষয়ে জানতে চাই, তিন বরের মধ্যে এই আমার তৃতীয় বর”।

 

দেবৈরত্রাপি বিচিকিৎসিতং পুরা

ন হি সুবিজ্ঞেয়মণুরেষ ধর্মঃ।

অন্যং বরং নচিকেতো বৃণীষ্ব

মা মোপরোৎসীরতি মা সৃজৈনম্‌।। ১/১/২১

দেবৈঃ অত্র অপি বিচিকিৎসিতম্‌ পুরা

ন হি সুবিজ্ঞেয়ম্‌ অণুঃ এষ ধর্মঃ।

অন্যম্‌ বরম্‌ নচিকেতঃ বৃণীষ্ব

মা মা উপরোৎসীঃ অতি মা সৃজ এনম্‌।। ১/১/২১

(যমরাজ বললেন) “এই বিষয়ে আগে দেবতারাও সংশয়ে ছিলেন, কারণ সূক্ষ্ম এই আত্মতত্ত্ব সহজে উপলব্ধি করা যায় না। তুমি অন্য বর প্রার্থনা করো নচিকেতা, আমাকে অনুরোধ করো না, এই বিষয়টি ছেড়ে দাও”।

 

দেবৈরত্রাপি বিচিকিৎসিতং কিল

ত্বং চ মৃত্যো যন্ন সুজ্ঞেয়মাত্থ

বক্তা চাস্য ত্বাদৃগন্যো ন লভ্যো

নান্যো বরস্তুল্য এতস্য কশ্চিৎ।। ১/১/২২

দেবৈঃ অত্র অপি বিচিকিৎসিতং কিল

ত্বং চ মৃত্যো যৎ ন সুজ্ঞেয়ম্‌ আত্থ।

বক্তা চ অস্য ত্বাদৃক্‌ অন্যঃ ন লভ্যঃ

ন অন্যঃ বরঃ তুল্যঃ এতস্য কঃ চিৎ।। ১/১/২২

(নচিকেতা বললেন) “দেবতাদেরও যখন এই বিষয়ে নিশ্চিত সংশয় ছিল, এবং হে যমরাজ, আপনিও বলছেন এই বিষয়টি সহজবোধ্য নয়, এ বিষয়ে আপনার মতো শ্রেষ্ঠ গুরু আর কাউকেই পাবো না, অতএব এই বরের তুল্য অন্য কোন বর আর কী হতে পারে?”  

 

শতায়ুষঃ পুত্রপৌত্রান্‌ বৃণীষ্ব

বহূন্‌ পশূন্‌ হস্তিহিরণ্যমশ্বান্‌।

ভূমের্মহদায়তনং বৃণীষ্ব,

স্বয়ং চ জীব শরদো যাবদিচ্ছসি।। ১/১/২৩

শত-আয়ুষঃ পুত্রপৌত্রান্‌ বৃণীষ্ব

বহূন্‌ পশূন্‌ হস্তি-হিরণ্যম্‌-অশ্বান্‌।

ভূমেঃ মহৎ-আয়তনং বৃণীষ্ব,

স্বয়ং চ জীব শরদঃ যাবৎ ইচ্ছসি।। ১/১/২৩

(মৃত্যুর গূঢ় রহস্য নিয়ে যমরাজ নচিকেতার সঙ্গে আলোচনায় ইচ্ছুক নন, তিনি নচিকেতাকে প্রলোভন দেখিয়ে নিরস্ত করার জন্যে বললেন) “তুমি পুত্র-পৌত্র নিয়ে শত বর্ষ আয়ুর বর নাও। অনেক গবাদিপশু, হাতি, অশ্ব এবং স্বর্ণ কিংবা বিস্তীর্ণ সাম্রাজ্য প্রার্থনা কর, কিংবা যত বছর ইচ্ছে, নিজে ততদিন জীবিত থাকো”। 

 

এতত্তুল্যং যদি মন্যসে বরং বৃণীষ্ব

বিত্তং চিরজীবিকাং চ।

মহাভূমৌ নচিকেতস্ত্বমেধি কামানাং

ত্বা কামভাজং করোমি।। ১/১/২৪

এতৎ তুল্যং যদি মন্যসে বরং বৃণীষ্ব

বিত্তং চিরজীবিকাং চ।

মহাভূমৌ নচিকেতঃ ত্বম্‌ এধি কামানাম্‌

ত্বা কামভাজং করোমি।। ১/১/২৪

“যদি এই বরের তুল্য অন্য বর মনে করো, প্রার্থনা করো। যদি সম্পদ (সোনা, ধনরত্ন) ও চিরজীবন চাও, তাও প্রার্থনা করতে পারো। হে নচিকেতা, তুমি বিশাল এক ভূখণ্ডের রাজা হও, তোমাকে আমি সমস্ত কাম্যবস্তু ভোগের অধিকারী করে দিচ্ছি”।


যে যে কামা দুর্লভা মর্ত্যলোকে

সর্বান্‌ কামাংশ্ছন্দিতঃ প্রার্থয়স্ব।

ইমা রামাঃ সরথাঃ সতূর্যা

ন হীদৃশা লম্ভনীয়া মনুষ্যৈঃ।

আভির্মৎপ্রত্তাভিঃ পরিচারয়স্ব

নচিকেতো মরণং মাঽনুপ্রাক্ষী।। ১/১/২৫

যে যে কামা দুর্লভা মর্ত্যলোকে

সর্বান্‌ কামান্‌ ছন্দিতঃ প্রার্থয়স্ব।

ইমাঃ রামাঃ সরথাঃ সতূর্যা

ন হি ঈদৃশা লম্ভনীয়া মনুষ্যৈঃ।

আভিঃ মৎ-প্রত্তাভিঃ পরিচারয়স্ব

নচিকেতঃ মরণম্‌ মা অনুপ্রাক্ষীঃ।। ১/১/২৫

“মর্তলোকে যা যা দুর্লভ কাম্যবস্তু আছে, সেই সমস্ত ইচ্ছেমতো কামনা করো। (তোমার সামনেই) এই যে সব সুন্দরী অপ্সরাগণ রথে চড়ে, বাদ্যযন্ত্র নিয়ে উপস্থিত রয়েছে, এরা অবশ্যই মানুষের জন্যে নয়, কিন্তু আমার বরে তুমি এদের সেবা উপভোগ করো। কিন্তু হে নচিকেতা, তুমি মরণবিষয়ে আর কোন প্রশ্ন করো না”। 

 

শ্বোভাবা মর্ত্যস্য যদন্তকৈতৎ

সর্বেন্দ্রিয়াণাং জরয়ন্তি তেজঃ।

অপি সর্বং জীবিতমল্পমেব

তবৈব বাহাস্তব নৃত্যগীতে।। ১/১/২৬

শ্বঃ-ভাবাঃ মর্ত্যস্য যৎ অন্তক এতৎ

সর্ব-ইন্দ্রিয়াণাং জরয়ন্তি তেজঃ।

অপি সর্বং জীবিতম্‌ অল্পম্‌ এব

তব এব বাহাঃ তব নৃত্যগীতে।। ১/১/২৬

(নচিকেতা বললেন) “হে অন্তক, আপনার বলা কামনার বস্তু কাল পর্যন্ত থাকবে না, (কামনা) সকল ইন্দ্রিয়ের শক্তি জারিত করতে থাকবে। তাছাড়া সকলেরই জীবন অল্প। অতএব রথ ইত্যাদি আপনারই থাকুক, নৃত্যগীত আপনারই থাকুক”।

 

ন বিত্তেন তর্পণীয় মনুষ্যো

লপ্স্যামহে বিত্তমদ্রাক্ষ্ম চেৎ ত্বা।

জীবিষ্যামো যাবদীশিষ্যসি

ত্বং বরস্তু মে বরণীয়ঃ স এব।। ১/১/২৭

ন বিত্তেন তর্পণীয় মনুষ্যো

লপ্স্যামহে বিত্তম্‌ অদ্রাক্ষ্ম চেৎ ত্বা।

জীবিষ্যামঃ যাবৎ ঈশিষ্যসি

ত্ব্ম্‌ বরঃ তু মে বরণীয়ঃ স এব।। ১/১/২৭

“বিত্ত নিয়ে মানুষ কখনো তৃপ্ত হয় না। আপনার দর্শন লাভেই আমার বিত্ত লাভ হয়ে গেছে। আর যতদিন আপনি যমপদে রয়েছেন, ততদিন আমার জীবনও থাকবে (তার জন্যে বর প্রার্থনার প্রয়োজন কী?) কিন্তু আমার প্রার্থনার বর ওইটাই”।  

 

অজীর্যতামমৃতানামুপেত্য

জীর্যন্‌ মর্ত্যঃ ক্বধঃস্থ প্রজানন্‌।

অভিধ্যায়ন্‌ বর্ণরতিপ্রমোদান্‌

অতিদীর্ঘে জীবিতে কো রমেত।। ১/১/২৮

অজীর্যতাম্‌ অমৃতানাম্‌ উপেত্য

জীর্যন্‌ মর্ত্যঃ কু-অধঃস্থ প্রজানন্‌।

অভিধ্যায়ন্‌ বর্ণ-রতি-প্রমোদান্‌

অতিদীর্ঘে জীবিতে কঃ রমেত।। ১/১/২৮

“নিম্নলোকে বাস করা জরা-মৃত্যুশীল মানুষ, জরাহীন অমর দেবতাদের সামনে উপস্থিত হয়ে, তাঁদের (কৃপায় শ্রেষ্ঠ জ্ঞান লাভ করা যায়) জেনেও, গান-কামনা-সুখের ভোগ অনিত্য বুঝেও, অতি দীর্ঘ জীবনের আনন্দ কে পায়?”

 

যস্মিন্নিদং বিচিকিৎসন্তি মৃত্যো

যৎ সাম্পরায়ে মহতি ব্রূহি নস্তৎ।

যোঽয়ং বরো গূঢ়মনুপ্রবিষ্টো

নান্যং তস্মান্নচিকেতা বৃণীতে।। ১/১/২৯

যস্মিন্‌ ইদম্‌ বিচিকিৎসন্তি মৃত্যঃ

যৎ সাম্পরায়ে মহতি ব্রূহি নঃ তৎ।

যঃ অয়ং বরঃ গূঢ়ম্‌ অনুপ্রবিষ্টঃ

না অন্যং তস্মাৎ নচিকেতা বৃণীতে।। ১/১/২৯

 “হে মৃত্যু, যে আত্মা এবং পরলোকের বিষয়ে লোকের মনে সংশয় রয়েছে, সেই বিষয়েই আমাকে বলুন। আত্মবিষয়ে নিহিত এই যে দুর্বোধ্য জ্ঞান, সেই বর ছাড়া অন্য কোন বর নচিকেতা প্রার্থনা করে না”।

প্রথম অধ্যায় প্রথম বল্লী সমাপ্ত

কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ স্বামী গম্ভীরানন্দ, উদ্বোধন কার্যালয় ও শ্রীযুক্ত অতুলচন্দ্র সেন, হরফ প্রকাশণী

চলবে... ১/২ বল্লী আসবে সামনের বুধবার।  

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নতুন পোস্টগুলি

কঠোপনিষদ - ১/১

  সূচনা   এই উপনিষদটি কৃষ্ণযজুর্বেদীয় তৈত্তিরীয় শাখার কঠ বা কাঠক ব্রাহ্মণের অন্তর্গত বলে কঠোপনিষদ নামে পরিচিত। এই উপনিষদে যম ও নচিকেতার আখ...