শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

কেনোপনিষদ - খণ্ড ১ ও ২

 

এই উপনিষদের প্রথম শব্দ ‘কেন’, এই কারণে এই উপনিষদের নাম কেনোপনিষদ। এই “কেন” শব্দের অর্থ – কেন বা why নয়। কেন এই সংস্কৃত শব্দের অর্থ কাহার দ্বারা – অর্থাৎ জগতের সমস্ত ঘটনা কে ঘটাচ্ছেন?  এ উপনিষদটি চার খণ্ডে বিভক্ত। প্রথম দু খণ্ড পদ্যে এবং শেষ দুই খণ্ড গদ্যে লিখিত। অনেক পণ্ডিতের মতে, এই উপনিষদের গদ্যাংশ, পদ্যাংশের অনেক আগেই রচিত হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে আরও মনে রাখতে হবে – ঋগ্বেদ থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের অধিকাংশ শাস্ত্রীয় রচনা ছন্দবদ্ধ পদ্যাকারে রচিত – গদ্য রচনা যথেষ্ট বিরল। অতএব, এই উপনিষদের গদ্যাংশ ভারতের প্রাচীনতম গদ্যরচনার অন্যতম নিদর্শন।    

ঈশোপনিষদের মতো কেনোপনিষদেরও উদ্দেশ্য অমৃতত্ব লাভ এবং ব্রহ্মের সঙ্গে জগৎ ও জীবের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা। তবে ঈশোপনিষদের মতো এই উপনিষদের বিষয় এত ব্যাপক নয়। এর বিষয় জীব-আত্মার সঙ্গে ব্রহ্ম-আত্মার সম্বন্ধ স্থাপন। প্রথমে শিষ্য-গুরু প্রশ্ন ও উত্তরের মাধ্যমে, তারপর একটি রূপক কাহিনীর সাহায্যে ব্রহ্মতত্ত্বের আলোচনা করা হয়েছে। 

শান্তিপাঠ

 

ওঁ সহ নাববতু, সহ নৌ ভুনক্তু, সহ বীর্যং করবাবহৈ তেজস্বি নাবধীতমস্তু,

মা বিদ্বিষাবহৈ।।

ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।

ওঁ সহ নৌ অবতু, সহ নৌ ভুনক্তু, সহ বীর্যং করবাবহৈ তেজস্বি নৌ অধীতম্‌ অস্তু,

মা বিদ্বিষাবহৈ।।

ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।

 

আমাদের দুজনকে তিনি সমভাবে রক্ষা করুন, দুজনকেই সমভাবে (জ্ঞান) লাভ করান, আমাদের উভয়কেই (জ্ঞানলাভের) উপযুক্ত করে তুলুন। আমাদের উভয়ের কাছেই লব্ধজ্ঞান যেন তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠে। (আমরা যেন পরষ্পরের প্রতি) বিদ্বেষ না করি।  ওঁ শান্তি, সকল বিঘ্নের শান্তি হোক।

 

ওঁ আপ্যায়ন্তু মমাঙ্গানি বাক্‌ প্রাণশ্চক্ষুঃ শ্রোত্রমথো বলমিন্দ্রিয়াণি চ সর্বাণি। সর্বং ব্রহ্মৌপনিষদম্‌। মাহং ব্রহ্ম নিরাকুর্যাং, মা মা ব্রহ্মা নিরাকরোৎ অনিরাকরণমস্তু।

অনিরাকরণং মেঽস্তুতদাত্মনি নিরতে য উপনিষৎসু ধর্মাস্তে ময়ি সন্তু, তে ময়ি সন্তু। ওঁ শান্তিঃ  ওঁ শান্তিঃ  ওঁ শান্তিঃ ।।

 

ওঁ আপ্যায়ন্তু মম অঙ্গানি বাক্‌ প্রাণঃ চক্ষুঃ শ্রোত্রম্‌ অথ বলম্‌ ইন্দ্রিয়াণি চ সর্বাণি। সর্বং ব্রহ্ম ঔপনিষদম্‌। মা অহং ব্রহ্ম নিরাকুর্যাং, মা মা ব্রহ্মা নিরাকরোৎ অনিরাকরণম্‌ অস্তু।

অনিরাকরণং মে অস্তুতৎ-আত্মনি নিরতে য উপনিষৎসু ধর্মাঃ তে ময়ি সন্তু, তে ময়ি সন্তু। ওঁ শান্তিঃ  ওঁ শান্তিঃ  ওঁ শান্তিঃ ।।

 

আমার সমস্ত অঙ্গ – বাক, প্রাণ, চোখ, কান, বল ও সকল ইন্দ্রিয় পুষ্টিলাভ করুক। এই সমস্তই যে ব্রহ্মের স্বরূপ, সেই তত্ত্বই এই উপনিষদ।  আমি যেন ব্রহ্মকে অস্বীকার না করি, ব্রহ্ম যেন আমাকে প্রত্যাখ্যান না করেন, কখনোই প্রত্যাখ্যান না করেন।

তাঁর সঙ্গে আমার নিত্যসম্বন্ধ থাকুক। উপনিষৎ সমূহে যে ধর্ম তত্ত্ব আছে, তারা আমার আত্মায় নিযুক্ত হোক, সেই আত্মায় আমি নিরত হই। ওঁ শান্তি, সকল বিঘ্নের শান্তি হোক।

 

প্রথম খণ্ড

 

কেনেষিতং পততি প্রেষিতং মনঃ

কেন প্রাণঃ প্রথমঃ প্রৈতি যুক্তঃ।

কেনেষিতাং বাচমিমাং বদন্তি

চক্ষুঃ শ্রোত্রং ক উ দেবো যুনক্তি।। ১/১

 

কেন ইষিতং পততি প্রেষিতং মনঃ

কেন প্রাণঃ প্রথমঃ প্রৈতি যুক্তঃ।

কেন ইষিতাং বাচম্‌ ইমাং বদন্তি

চক্ষুঃ শ্রোত্রং ক উ দেবঃ যুনক্তি।। ১/১

 

কার ইচ্ছায় এবং নির্দেশে আমাদের মন চালিত হয়? কার আদেশে প্রধান প্রাণ নিজ কাজে নিযুক্ত হয়? কার ইচ্ছায় মানুষ এত কথা বলে, কোন জ্যোতির্ময় পুরুষই বা চোখ, কানকে নিয়ন্ত্রণ করেন? [এই প্রশ্নগুলির উত্তর জানতে কোন শিষ্য যেন তাঁর গুরুকে জিজ্ঞাসা করছেন।]

এখানে “প্রাণঃ প্রথমঃ” – অর্থাৎ প্রাণই প্রধান – প্রাণ ছাড়া কোন ইন্দ্রিয়ই কার্যক্ষম হয় না।  

 

শ্রোত্রস্য শ্রোত্রং মনসো মনো যদ্‌

বাচো হ বাচং স উ প্রাণস্য প্রাণঃ।

চক্ষুষশ্চক্ষুরতিমুচ্য ধীরাঃ

প্রেত্যাস্মাল্লোকাদমৃতা ভবন্তি।। ১/২

শ্রোত্রস্য শ্রোত্রং মনসঃ মনঃ যদ্‌

বাচঃ হ বাচং স উ প্রাণস্য প্রাণঃ।

চক্ষুষঃ চক্ষুঃ অতিমুচ্য ধীরাঃ

প্রেত্য অস্মাৎ লোকাৎ অমৃতা ভবন্তি।। ১/২

   [শিষ্যের প্রশ্নের উত্তরে গুরু বলছেন] যাঁর শক্তিতে কান শুনতে পায়, মন চিন্তা করে, বাগেন্দ্রিয় কথা বলে, তাঁর শক্তিতেই প্রাণ উজ্জীবিত হয়, চোখ দেখতে পায়। তিনিই সমস্ত ইন্দ্রিয়ের চালক, পণ্ডিতেরা এই তত্ত্ব জেনে আত্মবুদ্ধি ত্যাগ করে, সংসারের ঊর্ধ্বে অমৃতলোক অনুভব করেন।   

 

ন তত্র চক্ষুর্গচ্ছতি ন বাগ্‌গচ্ছতি নো মনঃ।

ন বিদ্মো ন বিজানীমো যথৈতদনুশিষ্যাৎ।। ১/৩

ন তত্র চক্ষুঃ গচ্ছতি ন বাক্‌ গচ্ছতি ন মনঃ।

ন বিদ্মঃ ন বিজানীমঃ যথা এতৎ অনুশিষ্যাৎ।। ১/৩

চোখ তাঁকে দেখতে পায় না, বাক্যে তাঁকে বর্ণনা করা যায় না, মনেও তাঁর কল্পনা করা যায় না। আমরা তাঁর স্বরূপ জানি না, অতএব কী ভাবে তাঁর কথা তোমাকে বলবো, তাও জানি না।


অন্যদেব তদ্বিদিতাদথো অবিদিতাদধি।

ইতি শুশ্রুম পূর্বেষাং যে নস্তদ্‌ব্যাচচক্ষিরে।। ১/৪


অন্যৎ এব তৎ বিদিতাৎ অথ অবিদিতাৎ অধি।

ইতি শুশ্রুম পূর্বেষাং যে নঃ তৎ ব্যাচচক্ষিরে।। ১/৪

আমাদের জানা, এমনকি অজানা সকল বিষয় থেকেই তিনি ভিন্ন, আমাদের পূর্ববর্তী গুরুদের কাছে এমন ব্যাখ্যাই আমরা শুনেছি।


যদ্বাচাঽনুভ্যুদিতং যেন বাগভ্যুদ্যতে।

তদেব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি নেদং যদিদমুপাসতে॥ ১/


যৎ বাচা অনুভ্যুদিতং যেন বাক্‌ অভ্যুদ্যতে।

তৎ এব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি ন ইদম্‌ যৎ ইদম্‌ উপাসতে॥ ১/

যাঁকে কথায় প্রকাশ করা যায় না, কিন্তু আমাদের বাক্য যিনি প্রকাশিত করেন, তাঁকেই তুমি ব্রহ্ম বলে জানবে – কিন্তু যাঁকে আমরা উপাসনা করি, তিনি নন।

“ন ইদম্‌ যৎ ইদম্‌ উপাসতে” – অর্থাৎ যাঁকে আমরা উপাসনা করি, তিনি নন” - এই কথাটি পরবর্তী শ্লোকগুলিতে বারবার বলা হয়েছে কারণ এই বক্তব্যটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর আগের উপনিষদগুলি থেকে আমার জেনেছি – এক এবং অদ্বিতীয় ব্রহ্ম প্রকৃতপক্ষে সর্বব্যাপী এক চেতন-পুরুষ বা আত্মা, তিনিই আমাদের সকল জ্ঞানের প্রকাশক। এই ব্রহ্মই আমাদের একমাত্র উপাস্য। কিন্তু আমরা যে সকল অনাত্ম জড়পদার্থে – অর্থাৎ দেবদেবীর মূর্তিতে - ব্রহ্মত্ব আরোপ করে, সেই দেবদেবীর উপাসনা করি – তাঁরা কেউই স্বরূপতঃ ব্রহ্ম নন। তাঁদের উপাসনা কখনোই ব্রহ্মোপাসনা হতে পারে না। এমনকি আমাদের সনাতন ধর্মে যে ত্রিমূর্তি বা ত্রিদেবের – ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের উপাসনা করা হয়, সেই ত্রিদেবের ব্রহ্মাও ব্রহ্ম নন। ব্রহ্মা সাকার কিন্তু ব্রহ্ম নিরাকার। ব্রহ্ম সর্বব্যাপী এবং সচ্চিদানন্দস্বরূপ, অব্যক্ত, অনির্বচ্চনীয় জগতাত্মা।     

 

যন্মনসা ন মনুতে যেনাহুর্মনো মতম্।

তদেব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি নেদং যদিদমুপাসতে॥ ১/

যৎ মনসা ন মনুতে যেন আহুঃ মনঃ মতম্।

তৎ এব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি ন ইদং যৎ ইদম্‌ উপাসতে॥ ১/

মন যাঁকে চিন্তা করতে পারে না, অথচ যিনি মনে চেতনার প্রকাশ ঘটান, তাঁকেই তুমি ব্রহ্ম বলে জানবে – কিন্তু যাঁকে আমরা উপাসনা করি, তিনি নন।


যচ্চক্ষুষা ন পশ্যতি যেন চক্ষূংষি পশ্যতি।

তদেব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি নেদং যদিদমুপাসতে॥ ১/


যৎ চক্ষুষা ন পশ্যতি যেন চক্ষূংষি পশ্যতি।

তৎ এব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি ন ইদং যৎ ইদম্‌ উপাসতে॥ ১/

চোখ যাঁকে দেখতে পায় না, অথচ যিনি আমাদের দৃষ্টিতে আলো দিয়েছেন, তাঁকেই তুমি ব্রহ্ম বলে জানবে – কিন্তু যাঁকে আমরা উপাসনা করি, তিনি নন


যচ্ছ্রোত্রেণ ন শৃণোতি যেন শ্রোত্রমিদং শ্রুতম্।

তদেব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি নেদং যদিদমুপাসতে॥ ১/


যৎ শ্রোত্রেণ ন শৃণোতি যেন শ্রোত্রম্‌ ইদং শ্রুতম্।

তৎ এব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি ন ইদং যৎ ইদম্‌ উপাসতে॥ ১/

কান যাঁকে শুনতে পায় না, অথচ যিনি আমাদের শ্রবণে শব্দের বোধ সঞ্চার করেন, তাঁকেই তুমি ব্রহ্ম বলে জানবে – কিন্তু যাঁকে আমরা উপাসনা করি, তিনি নন।


যৎ প্রাণেন ন প্রাণিতি যেন প্রাণঃ প্রণীয়তে।

তদেব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি নেদং যদিদমুপাসতে॥ ১/


যৎ প্রাণেন ন প্রাণিতি যেন প্রাণঃ প্রণীয়তে।

তৎ এব ব্রহ্ম ত্বং বিদ্ধি ন ইদং যৎ ইদম্‌ উপাসতে॥ ১/

এই প্রাণ যে প্রাণকে উপলব্ধি করতে পারে না, অথচ যিনি আমাদের প্রাণে জীবনীশক্তি সঞ্চার করেন, তুমি তাঁকেই ব্রহ্ম বলে জানবে – কিন্তু এই যাঁকে আমরা উপাসনা করি, তিনি নন।

 

কেনোপনিষদ প্রথম খণ্ড সমাপ্ত

 

  

দ্বিতীয় খণ্ড

 

যদি মন্যসে সুবেদেতি দভ্রমেবাপি

নূনং ত্বং বেত্থ ব্রহ্মণো রূপম্।

যদস্য ত্বং যদস্য দেবেষ্বথ নু

মীমাংস্যমেব তে; মন্যে বিদিতম॥ ২/

যদি মন্যসে সুবেদ ইতি দভ্রম্‌ এব অপি

নূনং ত্বং বেত্থ ব্রহ্মণো রূপম্।

যদস্য ত্বং যদস্য দেবেষু অথ নু

মীমাংস্যম্‌ এব তে; মন্যে বিদিতম॥ ২/

যদি তুমি মনে কর আমি ব্রহ্মকে ভালোভাবেই জেনেছি, তবে এই ব্রহ্মের দেবত্ব স্বরূপ সামান্য রূপই জেনেছ। সুতরাং ব্রহ্ম আজও তোমার বিচার্য বিষয়। [শিষ্য বললেন] “আমার মনে হয় আমি ব্রহ্মকে জেনেছি

 

নাহং মন্যে সুবেদেতি নো ন বেদেতি বেদ চ।

যো নস্তদ্বেদ তদ্বেদ নো ন বেদেতি বেদ চ॥ ২/

না অহং মন্যে সুবেদ ইতি নো ন বেদ ইতি বেদ চ।

যো নঃ তৎ বেদ তৎ বেদ নো ন বেদ ইতি বেদ চ॥ ২/

আমি মনে করি না আমি ব্রহ্মকে ভালোভাবে জেনেছি। আমি তাঁকে জানি না তা নয়, আবার জানি যে তাও নয়। আমাদের [শিষ্যদের] মধ্যে যিনি এই তত্ত্ব বুঝতে পেরেছেন, তিনিই ব্রহ্মকে বুঝতে পেরেছেন।

 

যস্যামতং তস্য মতং মতং যস্য ন বেদ সঃ।

অবিজ্ঞাতং বিজানতাং বিজ্ঞাতমবিজানতাম্॥ ২/

যস্য অমতং তস্য মতং মতং যস্য ন বেদ সঃ।

অবিজ্ঞাতং বিজানতাং বিজ্ঞাতম্‌ অবিজানতাম্॥ ২/

যিনি মনে করেন তিনি ব্রহ্মকে জানেন না, প্রকৃতপক্ষে তিনিই ব্রহ্মকে জানেন। যিনি মনে করেন তিনি ব্রহ্মকে জেনেছেন, তিনি তাঁকে জানেননি। প্রকৃত জ্ঞানী ব্রহ্মকে জানেন এমন মনে করেন না, কিন্তু অজ্ঞ জনেরা মনে করে।

 

প্রতিবোধবিদিতং মতমমৃতত্বং হি বিন্দতে।

আত্মনা বিন্দতে বীর্যং বিদ্যয়া বিন্দতেঽমৃতম॥ ২/

প্রতিবোধবিদিতং মতম্‌ অমৃতত্বং হি বিন্দতে।

আত্মনা বিন্দতে বীর্যং বিদ্যয়া বিন্দতে অমৃতম্‌/

যিনি প্রতিটি আত্মবোধে ব্রহ্মকে উপলব্ধি করেন, তিনিই অমৃতরূপ মোক্ষ লাভ করেন। শুধুমাত্র আত্মজ্ঞানের মাধ্যমে যে সামর্থ্য লাভ করা যায়, সেই বিদ্যাতেই অমৃতত্ব লাভ সম্ভব 

 

ইহ চেদবেদীদথ সত্যমস্তি

ন চেদিহাবেদীন্মহতী বিনষ্টিঃ।

ভূতেষু ভূতেষু বিচিত্য ধীরাঃ

প্রেত্যাস্মাল্লোকাদমৃতা ভবন্তি॥ ২/

ইহ চেৎ অবেদীৎ অথ সত্যম্‌ অস্তি

ন চেৎ ইহ অবেদীৎ মহতী বিনষ্টিঃ।

ভূতেষু ভূতেষু বিচিত্য ধীরাঃ

প্রেত্য অস্মাৎ লোকাৎ অমৃতা ভবন্তি॥ ২/

এই জীবনেই যদি কেউ ব্রহ্মকে জানতে পারে, তার সত্য লাভ হয়, কিন্তু তা যদি না হয় তার মহতী বিনাশ উপস্থিত হয় (অর্থাৎ সে এই সংসারের জরা-মৃত্যু, সুখ-দুঃখের অধীন হয়)। অতএব জ্ঞানীব্যক্তিরা সর্বভূতে পরম ব্রহ্মকে উপলব্ধি করে, এই জাগতিক লোকের ঊর্ধে অমৃতস্বরূপ হয়ে থাকেন।

 

কেনোপনিষদ দ্বিতীয় খণ্ড সমাপ্ত


...চলবে...

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নতুন পোস্টগুলি

কেনোপনিষদ - খণ্ড ১ ও ২

  এই উপনিষদের প্রথম শব্দ ‘কেন’, এই কারণে এই উপনিষদের নাম কেনোপনিষদ। এই “কেন” শব্দের অর্থ – কেন বা why নয়। কেন এই সংস্কৃত শব্দের অর্থ কাহার দ...