বুধবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

গীতা - ৬ষ্ঠ পর্ব

     



এর আগের পঞ্চম অধ্যায়ঃ সন্ন্যাসযোগ পড়া যাবে পাশের সূত্রে "গীতা - ৫ম পর্ব"


ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ ধ্যানযোগ


[যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত দুই পক্ষের মাঝে রণক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে "ধ্যানযোগ" জানার কী প্রয়োজন? 

প্রয়োজন কারণ, যুদ্ধ করাও এক সম্যক কর্ম - ধ্যান কর্মও বটে - কারণ  "সমস্ত ইন্দ্রিয় জয় ক’রে, যিনি মাটি, পাথর আর সোনার মধ্যে কোন পার্থক্য অনুভব করেন না, এবং  সুহৃদ, মিত্র, শত্রু, উদাসীন, দুর্বৃত্ত, বন্ধু, সদাচারী, এমনকি পাপী ব্যক্তিকেও যিনি সমান চোখে দেখেন,  তাঁকেই যোগারূঢ় সন্ন্যাসী বলা হয়"।  এমন নিবিড় যোগধ্যানে নিবিষ্ট যুদ্ধই  ধর্মযুদ্ধ - দ্বিধাগ্রস্ত  সংশয়াচ্ছন্ন চিত্তে যে যুদ্ধ তাকে নিষ্ঠুর  গণহত্যা বলা যায়।]



শ্রীভগবানুবাচ

অনাশ্রিতঃ কর্মফলং কার্যং কর্ম করোতি যঃ।

স সন্ন্যাসী চ যোগী চ ন নিরগ্নির্ন চাক্রিয়ঃ।।

শ্রীভগবান উবাচ

অনাশ্রিতঃ কর্মফলং কার্যং কর্ম করোতি যঃ।

স সন্ন্যাসী চ যোগী চ ন নিরগ্নিঃ ন চ অক্রিয়ঃ।।

শ্রীভগবান বললেন- অগ্নিহীন যজ্ঞের অনুষ্ঠানকারী অথবা কর্মত্যাগী ব্যক্তিরা নন, কর্মফলের আশা না করে যিনি কর্তব্য কর্ম করেন, তিনিই সন্ন্যাসী, তিনিই যোগী।

 

যং সন্ন্যাসমিতি প্রাহুর্যোগং তং বিদ্ধি পাণ্ডব।

ন হ্যসংন্যস্তসংকল্পো যোগী ভবতি কশ্চন।।

যং সন্ন্যাসম্‌ ইতি প্রাহুঃ যোগং তং বিদ্ধি পাণ্ডব।

ন হি অসংন্যস্ত-সংকল্পঃ যোগী ভবতি কঃ চন।।

হে পাণ্ডব, শাস্ত্র যাকে সন্ন্যাসী বলে, তাকেই কর্মযোগী বলে জানবে। কারণ, সংকল্প অর্থাৎ কর্মফলের বাসনা ত্যাগ না হলে কর্মযোগী হওয়া যায় না।

 

আরুরুক্ষোর্মুনের্যোগং কর্ম কারণমুচ্যতে।

যোগারূঢ়স্য তস্যৈব শমঃ কারণমুচ্যতে।।

আরুরুক্ষোঃ মুনেঃ যোগং কর্ম কারণম্‌ উচ্যতে।

যোগ-আরূঢ়স্য তস্য এব শমঃ কারণম্‌ উচ্যতে।।

যে জ্ঞানীব্যক্তি জ্ঞানযোগে উত্তরণের জন্য উৎসুক, তাঁরও সাধনার একমাত্র পথ এই কর্মযোগ। জ্ঞানযোগে প্রতিষ্ঠিত যোগারূঢ় ব্যাক্তির পরমশান্তি এবং সকল কর্মের অবসানের কারণও এই কর্মযোগ, এমনই বলা হয়।

 

যদা হি নেন্দ্রিয়ার্থেষু ন কর্মস্বনুষজ্যতে।

সর্বসংকল্পসন্ন্যাসী যোগারূঢ়স্তদোচ্যতে।।

যদা হি ন ইন্দ্রিয়-অর্থেষু ন কর্মস্ব অনুষজ্যতে।

সর্ব-সংকল্প-সন্ন্যাসী যোগারূঢ়ঃ তদা উচ্যতে।।

যে জ্ঞানীব্যক্তি সকল কামনা মুক্ত হয়ে, সমস্তবিষয় থেকে, এমনকি নিত্যকর্ম থেকেও ইন্দ্রিয়ের সমস্ত আসক্তি ত্যাগ করতে সক্ষম হন, তাঁকেই যোগারূঢ় জ্ঞানী বলা হয়।   

 

উদ্ধোরেদাত্মনাত্মানং নাত্মানমবসাদয়েৎ।

আত্মেব হ্যাত্মনো বন্ধুরাত্মৈব রিপুরাত্মনঃ।।

উদ্ধোরেৎ আত্মন আত্মানং ন আত্মানম্‌ অবসাদয়েৎ।

আত্মা এব হি আত্মনঃ বন্ধুঃ আত্মা এব রিপুঃ আত্মনঃ।।

বিবেকযুক্ত আত্মা, জীব আত্মার উত্তরণের এবং বিবেকহীন আত্মা, জীব আত্মার পতনের কারণ হয়। কারণ আত্মা কখনও আত্মার পরমবন্ধু, আবার কখনও চরমশত্রু।

 

বন্ধুরাত্মাত্মনস্তস্য যেনাত্মৈবাত্মনা জিতঃ।

অনাত্মনস্তু শত্রুত্বে বর্তেতাত্মৈব শত্রুবৎ।।

বন্ধুঃ আত্মা আত্মনঃ তস্য যেন আত্মা এব আত্মনা জিতঃ।

অনাত্মনঃ তু শত্রুত্বে বর্তেত আত্মা এব শত্রুবৎ।।

যে আত্মার প্রভাবে ইন্দ্রিয়ের আসক্তি দূর হয়, সেই আত্মা পরমবন্ধু, কিন্তু যে আত্মা ইন্দ্রিয়কে উত্তেজিত করে, অসংযত ক’রে তোলে, সেই আত্মা চরম শত্রু।  

 

জিতাত্মনঃ প্রশান্তস্য পরমাত্মা সমাহিতঃ।

শীতোষ্ণসুখদুঃখেষু তথা মানাপমানয়োঃ।।

জিতাত্মনঃ প্রশান্তস্য পরমাত্মা সমাহিতঃ।

শীত-উষ্ণ-সুখ-দুঃখেষু তথা মান-অপমানয়োঃ।।

সমস্ত ইন্দ্রিয়কে জয় ক’রে, প্রশান্তচিত্তে যে ব্যক্তি ব্রহ্ম উপলব্ধিতে অবস্থান করেন, তিনি শীত-গ্রীষ্মে, সুখ-দুঃখে, সম্মান কিংবা অপমানে অবিচলিত থাকেন।

 

জ্ঞানবিজ্ঞানতৃপ্তাত্মা কূটস্থো বিজিতেন্দ্রিয়ঃ।

যুক্ত ইত্যুচ্যতে যোগী সমলোষ্টাশ্মকাঞ্চনঃ।।

জ্ঞানবিজ্ঞানতৃপ্ত আত্মা কূটস্থঃ বিজিত-ইন্দ্রিয়ঃ।

যুক্ত ইতি উচ্যতে যোগী সম-লোষ্ট-অশ্ম-কাঞ্চনঃ।।

শাস্ত্র এবং বিভিন্ন তত্ত্বব্যাখ্যায় যিনি সন্তুষ্ট এবং নির্বিকার, সমস্ত ইন্দ্রিয় জয় ক’রে, যিনি মাটি, পাথর আর সোনার মধ্যে কোন পার্থক্য অনুভব করেন না, তাঁকেই যোগারূঢ় সন্ন্যাসী বলা হয়।

 

সুহৃন্মিত্রার্ষুদাসীনমধ্যস্থদ্বেষ্যবন্ধুষু।

সাধুষ্বপি চ পাপেষু সমবুদ্ধির্বিশিষ্যতে।।

সুহৃৎ-মিত্র-অরি-উদাসীন-মধ্যস্থ-দ্বেষ্য-বন্ধুষু।

সাধুষু অপি চ পাপেষু সমবুদ্ধিঃ বিশিষ্যতে।।

সুহৃদ, মিত্র, শত্রু, উদাসীন, দুর্বৃত্ত, বন্ধু, সদাচারী, এমনকি পাপী ব্যক্তিকেও যিনি সমান চোখে দেখেন, তিনিই যোগারূঢ়।

 

১০

যোগী যুঞ্জীত সততমাত্মানং রহসি স্থিতঃ।

একাকী যতচিত্তাত্মা নিরাশীরপরিগ্রহঃ।।

যোগী যুঞ্জীত সততম্‌ আত্মানং রহসি স্থিতঃ।

একাকী যত-চিত্ত-আত্মা নিরাশীঃ অপরিগ্রহঃ।।

ধ্যানযোগী একাকী সর্বদা নির্জনে থেকে, দেহ ও মনকে সংযত ক’রে, নিশ্চিন্ত চিত্তে, কোন কিছু পাওয়ার অথবা কোন কিছু দেওয়ার আশা না রেখে, আত্মাকে সমাহিত করবেন। 

  

১১

শুচৌ দেশে প্রতিষ্ঠাপ্য স্থিরমাসনমাত্মনঃ।

নাত্যুচ্ছ্রিতং নাতিনীচং চৈলাজিনকুশোত্তরম্‌।।

শুচৌ দেশে প্রতিষ্ঠাপ্য স্থিরম্‌ আসনম্‌ আত্মনঃ।

না অতি উচ্ছ্রিতং না আতি নীচং

চৈল-অজিন-কুশ-উত্তরম্‌।।

পবিত্র স্থানে, প্রথমে কুশের আসন, তার ওপর মৃগচর্ম এবং বস্ত্র দিয়ে খুব উঁচু অথবা খুব নিচু নয় এমন এক স্থায়ী আসন প্রতিষ্ঠা ক’রে, যোগী ধ্যানে বসবেন

 

১২

তত্রৈকাগ্রং মনঃ কৃত্বা যতচিত্তেন্দ্রিয়ক্রিয়ঃ।

উপবিশ্যাসনে যুঞ্জ্যাদ্‌ যোগমাত্মবিশুদ্ধয়ে।।

তত্র একাগ্রং মনঃ কৃত্বা যত-চিত্ত-ইন্দ্রিয়-ক্রিয়ঃ।

উপবিশ্য আসনে যুঞ্জ্যাদ্‌ যোগম্‌ আত্মবিশুদ্ধয়ে।।

সেই আসনে স্থিরভাবে বসে, একাগ্র মনে, অন্তরের এবং ইন্দ্রিয়ের সমস্ত চাঞ্চল্য সংযত ক’রে, আত্মার বিশুদ্ধির জন্যে যোগাভ্যাস করবে।

 

১৩

সমং কায়শিরোগ্রীবং ধারয়ন্নচলং স্থিরম্‌।

সংপ্রেক্ষ্য নাসিকাগ্রং স্বং দিশশ্চানবলোকয়ন্‌।।

সমং কায়-শিরঃ-গ্রীবং ধারয়ন্‌ অচলং স্থিরম্‌।

সংপ্রেক্ষ্য নাসিকাগ্রং স্বং দিশঃ চ অনবলোকয়ন্‌।।

দেহ, মাথা ও গ্রীবা একরেখায় নিশ্চলভাবে ধারণ ক’রে, কোনদিকে দৃষ্টি না দিয়ে, শুধু নিজের নাকের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখতে হবে। 

 

১৪

প্রশান্তাত্মা বিগতভীর্ব্রহ্মচারিব্রতে স্থিতঃ।

মনঃ সংযম্য মচ্চিত্তো যুক্ত আসীত মৎপরঃ।।

প্রশান্ত আত্মা বিগতভীঃ ব্রহ্মচারি-ব্রতে স্থিতঃ।

মনঃ সংযম্য মৎ চিত্তঃ যুক্ত আসীত মৎপরঃ।।

প্রশান্ত চিত্তে, মনে কোন ভয় না রেখে, ব্রহ্মচর্য ব্রতে মনকে সংযত রেখে, শুধুমাত্র আমার চিন্তায় এবং সবকিছু আমাতেই সমর্পণ ক’রে, সমাহিত মনে ধ্যান করতে হবে।

 

১৫

যুঞ্জন্নেবং সদাত্মানং যোগী নিয়তমানসঃ।

শান্তিং নির্বাণপরমাং মৎসংস্থামধিগচ্ছতি।।

যুঞ্জন্‌ এবং সদা আত্মানং যোগী নিয়তমানসঃ।

শান্তিং নির্বাণ-পরমাং মৎসংস্থাম্‌ অধিগচ্ছতি।।

ধ্যানযোগী এইভাবে সর্বদা সংযত চিত্তে, একাগ্র চিত্ত ধ্যানে নিমগ্ন অবস্থায়, আমার স্বরূপ উপলব্ধি করেন এবং পরম শান্তি লাভ করেন।

 

১৬

নাত্যশ্নতস্তু যোগোঽস্তি ন চৈকান্তমনশ্নতঃ।

ন চাতিস্বপ্নশীলস্য জাগ্রতো নৈব চার্জুন।।

না অতি অশ্নতঃ তু যোগঃ অস্তি ন চ একান্তম্‌ অশ্নতঃ।

ন চ অতি স্বপ্নশীলস্য জাগ্রতঃ ন এব চ অর্জুন।।

হে অর্জুন, যারা বেশী আহার করে, অথবা যারা খুবই কম আহার করে তাদের পক্ষে ধ্যান সম্ভব নয়। যারা অত্যধিক নিদ্রাকাতর অথবা যারা সম্পূর্ণ নিদ্রাত্যাগী তাদেরও ধ্যান হয় না। 

 

১৭

যুক্তাহারবিহারস্য যুক্তচেষ্টস্য কর্মসু।

যুক্তস্বপ্নাববোধস্য যোগো ভবতি দুঃখহা।।

যুক্ত আহারবিহারস্য যুক্তচেষ্টস্য কর্মসু।

যুক্তস্বপ্ন অববোধস্য যোগঃ ভবতি দুঃখহা।।

যিনি পরিমিত আহার ও চলাফেরা করেন, যিনি কাজের চেষ্টায় নিজেকে যুক্ত রাখেন, যাঁর নিদ্রা ও জাগরণ নিয়মিত, তাঁর যোগ আচরণে সংসারের দুঃখ দূর হয়।  

 

১৮

যদা বিনিয়তং চিত্তমাত্মন্যেবাবতিষ্ঠতে।

নিস্পৃহঃ সর্বকামেভ্যো যুক্ত ইত্যুচ্যতে তদা।।

যদা বিনিয়তং চিত্তম্‌ আত্মনি এব অবতিষ্ঠতে।

নিস্পৃহঃ সর্বকামেভ্যো যুক্ত ইতি উচ্যতে তদা।।

যে অবস্থায় যোগীর সংযত চিত্ত নিজের আত্মাতেই স্থায়ী অবস্থান নেয় এবং সকল কামনা থেকে মন সম্পূর্ণ নির্বিকার হয়ে যায়, সেই অবস্থাকেই সমাধি বলে।

 

১৯

যথা দীপো নিবাতস্থো নেঙ্গতে সোপমা স্মৃতা।

যোগিনো যতচিত্তস্য যুঞ্জতো যোগমাত্মনঃ।।

যথা দীপঃ নিবাতস্থঃ ন ইঙ্গতে সা উপমা স্মৃতা।

যোগিনঃ যতচিত্তস্য যুঞ্জতঃ যোগম্‌ আত্মনঃ।।

বায়ুর প্রবাহহীন স্থানে দীপের শিখা স্থিরভাবে জ্বলতে থাকে, জেনে রেখ, ওই দীপশিখাই হল ধ্যান অভ্যাসকারী যোগীর সংযত চিত্তের উপমা।

 

২০

যত্রোপরমতে চিত্তং নিরুদ্ধং যোগসেবয়া।

যত্র চৈবাত্মনাত্মানং পশ্যন্নাত্মনি তুষ্যতি।।

যত্র উপরমতে চিত্তং নিরুদ্ধং যোগসেবয়া।

যত্র চ এব আত্মনা আত্মানং পশ্যন্‌ আত্মনি তুষ্যতি।।

যোগ ক্রিয়ায় সর্ব বিষয়ে আসক্তিহীন হয়ে, যে অবস্থায় মন পরমশান্তি লাভ করে এবং যে অবস্থায় শুদ্ধ চিত্তে পরম আত্মার উপলব্ধি হয়ে যোগী নিজের আত্মাতেই পরমাত্মার স্পর্শে আনন্দিত হন,

  

২১

সুখমাত্যন্তিকং যত্তদ্‌ বুদ্ধিগ্রাহ্যমতীন্দ্রিয়ম্‌।

বেত্তি যত্র ন চৈবায়ং স্থিতশ্চলতি তত্ত্বতঃ।।

সুখম্‌ আত্যন্তিকং যৎ তৎ বুদ্ধিগ্রাহ্যম্‌ অতীন্দ্রিয়ম্‌।

বেত্তি যত্র ন চ এব অয়ং স্থিতঃ চলতি তত্ত্বতঃ।।

যে অবস্থায় এই যোগী সমস্ত ইন্দ্রিয়ের অতীত এক অনন্য অনুভবে পরম আনন্দ উপলব্ধি করতে পারেন এবং একবার আত্মস্থিত হবার পর আর বিচলিত হন না, 

 

২২

যং লব্ধ্বা চাপরং লাভং মন্যতে নাধিকঃ ততঃ।

যস্মিন্‌ স্থিতো ন দুঃখেন গুরুণাপি বিচাল্যতে।।

যং লব্ধ্বা চ অপরং লাভং মন্যতে নাধিকঃ ততঃ।

যস্মিন্‌ স্থিতঃ ন দুঃখেন গুরুণা অপি বিচাল্যতে।।

যে অবস্থা লাভ করার পর যোগী আর অন্য সমস্ত লাভকেই তুচ্ছ জ্ঞান করেন এবং এই আত্মস্থিত অবস্থায় যিনি চরম দুঃখেও অবিচলিত থাকতে পারেন,  

 

২৩

তং বিদ্যাদ্দুঃখসংযোগবিয়োগং যোগসংজ্ঞিতম্‌।

স নিশ্চয়েন যোক্তব্যো যোগোঽনির্বিণ্ণচেতসা।।

তং বিদ্যাৎ দুঃখ-সংযোগ-বিয়োগং যোগ-সংজ্ঞিতম্‌।

সঃ নিশ্চয়েন যোক্তব্যঃ যোগঃ অনির্বিণ্ণচেতসা।।

সমস্ত দুঃখের সম্পর্কহীন এই অবস্থাকেই সমাধি বলে জানবে। আন্তরিক অধ্যবসায়ে নির্বিকার চিত্তে এই সমাধির একনিষ্ঠ সাধনাই কর্তব্য।

  

২৪

সংকল্পপ্রভবান্‌ কামান্‌ ত্যক্ত্বা সর্বানশেষতঃ।

মনসৈবেন্দ্রিয়গ্রামং বিনিয়ম্য সমন্ততঃ।।

সংকল্পপ্রভবান্‌ কামান্‌ ত্যক্ত্বা সর্বান্‌ অশেষতঃ।

মনসা এব ইন্দ্রিয়গ্রামং বিনিয়ম্য সমন্ততঃ।।

সংকল্পের সমস্ত কামনা নিঃশেষে ত্যাগ ক’রে, অন্তরের সমস্ত দিক থেকে সকল ইন্দ্রিয়কে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রিত ক’রে,

 

২৫

শনৈঃ শনৈরুপরমেদ্‌ বুদ্ধ্যা ধৃতিগৃহীতয়া।

আত্মসংস্থং মনঃ কৃত্বা ন কিঞ্চিদপি চিন্তয়েৎ।।

শনৈঃ শনৈঃ উপরমেৎ বুদ্ধ্যা ধৃতিগৃহীতয়া।

আত্মসংস্থং মনঃ কৃত্বা ন কিঞ্চিৎ অপি চিন্তয়েৎ।।

ধৈর্যের সঙ্গে, সমস্ত বুদ্ধি দিয়ে ধীরে ধীরে, মনের উত্তরণ ঘটাবে এবং মনকে নিজের আত্মায় প্রতিষ্ঠা ক’রে, অন্য আর কিছুই চিন্তা করবে না,   

 

২৬

যতো যতো নিশ্চরতি মনশ্চঞ্চলমস্থিরম্‌।

ততস্ততো নিয়ম্যৈতদাত্মন্যেব বশং নয়েৎ।।

যতঃ যতঃ নিশ্চরতি মনঃ ঞ্চলম্‌ অস্থিরম্‌।

ততঃ ততঃ নিয়ম্য এতৎ আত্মনি এব বশং নয়েৎ।।

চঞ্চল ও অস্থির মন যে যে বিষয়ের প্রতি বিক্ষিপ্ত হবে, সেই সেই বিষয় থেকে সংযত ক’রে, মনকে আত্মার বশে আনবে।

 

২৭

প্রশান্তমনসং হ্যেনং যোগিনং সুখমুত্তমম্‌।।

উপৈতি শান্তরজসং ব্রহ্মভূতমকল্মষম্‌।।

প্রশান্তমনসং হি এনং যোগিনং সুখম্‌ উত্তমম্‌।।

উপৈতি শান্তরজসং ব্রহ্মভূতম্‌ অকল্মষম্‌।।

প্রশান্ত চিত্তের যোগীই পরম আনন্দের অবস্থায় স্থিত হতে পারেন, কারণ তাঁর মন থেকে রজোগুণ দূর হয়ে, অন্তরে নিষ্পাপ ব্রহ্মভাবের উপলব্ধি হয় 

 

২৮

যুঞ্জন্নেবং সদাত্মানং যোগী  বিগতকল্মষঃ।

সুখেন ব্রহ্মসংস্পর্শমত্যন্তং সুখমশ্নুতে।।

যুঞ্জন্‌ এবং সদা আত্মানং যোগী  বিগত-কল্মষঃ।

সুখেন ব্রহ্মসংস্পর্শম্‌ অত্যন্তং সুখম্‌ অশ্নুতে।।

এই ভাবেই নিষ্পাপ যোগী নিজের আত্মায় নিত্য যোগ সাধনায়, অনায়াসে ব্রহ্মভাব অনুভব ক’রে পরম আনন্দ উপলব্ধি করেন।

 

২৯

সর্বভূতস্থমাত্মানং সর্বভূতানি চাত্মনি।

ঈক্ষতে যোগযুক্তাত্মা সর্বত্র সমদর্শনঃ।।

সর্বভূতস্থম্‌ আত্মানং সর্বভূতানি চ আত্মনি।

ঈক্ষতে যোগ-যুক্ত-আত্মা সর্বত্র সমদর্শনঃ।।

যোগ সমাহিত ব্যক্তি সমস্ত জীবে সমদর্শী হয়ে জীবের আত্মার মধ্যে নিজের আত্মা এবং নিজের আত্মায় সমস্ত জীবের আত্মাকে দেখে থাকেন। 


৩০

যো মাং পশ্যতি সর্বত্র সর্বং চ ময়ি পশ্যতি।

তস্যাহং ন প্রণশ্যামি স চ মে ন প্রণশ্যতি।।

যো মাং পশ্যতি সর্বত্র সর্বং চ ময়ি পশ্যতি।

তস্য অহং ন প্রণশ্যামি স চ মে ন প্রণশ্যতি।।

যিনি সর্বজীবের মধ্যে আমাকেই দেখতে পান এবং আমার মধ্যেই সমস্ত জগৎকে দেখে থাকেন, তাঁর কাছে আমি প্রত্যক্ষ হই এবং তিনিও আমার দৃষ্টির আড়ালে থাকেন না।

 

৩১

সর্বভূতস্থিতং যো মাং ভজত্যেকত্বমাস্থিতঃ।

সর্বথা বর্তমানোঽপি স যোগী ময়ি বর্ততে।।

সর্বভূতস্থিতং যঃ মাং ভজতি একত্বম্‌ আস্থিতঃ।

সর্বথা বর্তমানঃ অপি সঃ যোগী ময়ি বর্ততে।।

যিনি সর্ব জীবের আত্মায় একাত্ম হয়ে আমার ভজনা করেন, সেই যোগী যে পরিস্থিতিতেই থাকুন না কেন, আমার মধ্যেই অধিষ্ঠান করেন। 

 

৩২

আত্মৌপম্যেন সর্বত্র সমং পশ্যতি যোঽর্জুন।

সুখং বা যদি বা দুখং স যোগী পরমো মতঃ।।

আত্ম-উপম্যেন সর্বত্র সমং পশ্যতি যঃ অর্জুন।

সুখং বা যদি বা দুখং সঃ যোগী পরমঃ মতঃ।।

হে অর্জুন, যিনি সকল জীবের সঙ্গে একাত্ম হয়ে, তাদের সুখ ও দুঃখের সমান অনুভব, নিজের অন্তরে অনুভব করেন, আমার মতে তিনিই শ্রেষ্ঠ যোগী।

 

৩৩

অর্জুন উবাচ

যোঽয়ং যোগোস্ত্বয়া প্রোক্তঃ সাম্যেন মধুসূদন।

এতাস্যাহং ন পশ্যামি চঞ্চলত্বাৎ স্থিতিং স্থিরাম্‌।।

অর্জুন উবাচ

যঃ অয়ং যোগঃ ত্বয়া প্রোক্তঃ সাম্যেন মধুসূদন।

এতাস্য অহং ন পশ্যামি চঞ্চলত্বাৎ স্থিতিং স্থিরাম্‌।।

অর্জুন বললেন – হে মধুসূদন, এই যে তুমি সমদর্শন যোগের কথা বর্ণনা করলে, আমার মনের অস্থিরতার কারণে আমি এই যোগের অবিচল স্থিতি দেখতে পাচ্ছি না। 

 

৩৪

চঞ্চলং হি মনঃ কৃষ্ণ প্রমাথি বলবদ্দৃঢ়ম্‌।

তস্যাহং নিগ্রহং মন্যে বায়োরিব সুদুষ্করম্‌।।

চঞ্চলং হি মনঃ কৃষ্ণ প্রমাথি বলবৎ দৃঢ়ম্‌।

তস্য অহং নিগ্রহং মন্যে বায়োঃ ইব সুদুষ্করম্‌।।

হে কৃষ্ণ, যেহেতু মন অত্যন্ত চঞ্চল, শরীর ও ইন্দ্রিয়ের উপর তার শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ দুর্ভেদ্য। বায়ুর মতো সেই মনকে রুদ্ধ ক’রে রাখা অতি দুষ্কর বলেই আমি মনে করি।

   

৩৫

শ্রীভগবানুবাচ

অসংশয়ং মহাবাহো মনো দুর্নিগ্রহং চলম্‌।

অভ্যাসেন তু কৌন্তেয় বৈরাগ্যেণ চ গৃহ্যতে।।

শ্রীভগবান উবাচ

অসংশয়ং মহাবাহো মনঃ দুর্নিগ্রহম্‌ চলম্‌।

অভ্যাসেন তু কৌন্তেয় বৈরাগ্যেণ চ গৃহ্যতে।।

শ্রীভগবান বললেন- হে মহাবীর, মন যে চঞ্চল এবং একে দমন করা যে দুঃসাধ্য তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু একনিষ্ঠ যোগ অভ্যাসে এবং বৈরাগ্য চর্চায় এই মনকে রুদ্ধ করা সম্ভব, হে অর্জুন।

  

৩৬

অসংযতাত্মনা যোগো দুষ্প্রাপ ইতি মে মতিঃ।

বশ্যাত্মনা তু যততা শক্যোঽবাপ্তুমুপায়তঃ।।

অসংযত আত্মনা যোগঃ দুষ্প্রাপ ইতি মে মতিঃ।

বশ্য আত্মনা তু যততা শক্যঃ অবাপ্তুম্‌ উপায়তঃ।।

আমার মতে অসংযমী চিত্ত ব্যক্তির পক্ষে যোগসমাধি লাভ অসম্ভব। কিন্তু একাগ্র অধ্যবসায় ও সংযতচিত্ত ব্যক্তির নিয়মিত ধ্যান অভ্যাসে যোগসমাধি লাভ করা সম্ভব।

 

৩৭

অর্জুন উবাচ

অযতিঃ শ্রদ্ধয়োপেতো যোগাচ্চলিতমানসঃ।

অপ্রাপ্য যোগসংসিদ্ধিং কাং গতিং কৃষ্ণ গচ্ছতি।।

অর্জুন উবাচ

অযতিঃ শ্রদ্ধয়া উপেতো যোগাৎ চলিতমানসঃ।

অপ্রাপ্য যোগসংসিদ্ধিং কাং গতিং কৃষ্ণ গচ্ছতি।।

অর্জুন বললেন – হে কৃষ্ণ, শ্রদ্ধাবান ব্যক্তি একাগ্রতার অভাবে যোগভ্রষ্ট হয়ে যদি যোগসিদ্ধি লাভ করতে না পারেন, তাহলে তাঁর কি উপায় হবে?

 

৩৮

কচ্চিন্নোভয়বিভ্রষ্টশ্ছিন্নাভ্রমিব নশ্যতি।

অপ্রতিষ্ঠো মহাবাহো বিমূঢ়ো ব্রহ্মণঃ পথি।।

কচ্চিৎ ন উভয়-বিভ্রষ্টঃ ছিন্ন-অভ্রম-ইব নশ্যতি।

অপ্রতিষ্ঠঃ মহাবাহো বিমূঢ়ঃ ব্রহ্মণঃ পথি।।

হে কৃষ্ণ, ব্রহ্মত্বলাভের পথে, বিভ্রান্ত ও অস্থিরচিত্ত হয়ে, কর্মযোগ ও ধ্যানযোগ – এই উভয় পথ থেকেই ভ্রষ্ট হওয়া ব্যক্তি, এক খণ্ড ছিন্ন মেঘের মতোই কি নষ্ট হন না?

 

৩৯

এতন্মে সংশয়ং কৃষ্ণ ছেত্তুমর্হস্যশেষতঃ।

ত্বদন্যঃ সংশয়স্যাস্য ছেত্তা ন হ্যুপপদ্যতে।।

এতন্মে সংশয়ং কৃষ্ণ ছেত্তুম্‌ অর্হসি অশেষতঃ।

ত্বদন্যঃ সংশয়স্য অস্য ছেত্তা ন হি উপপদ্যতে।।

হে কৃষ্ণ, আমার মনের এই সংশয় নির্মূল করার যোগ্য লোক একমাত্র তুমিই। কারণ তুমি ছাড়া কোন ঋষি বা দেবতার, আমার এই সংশয় দূর করার সাধ্য নেই।

 

৪০

শ্রীভগবানুবাচ

পার্থ নৈবেহ নামুত্র বিনাশস্তস্য বিদ্যতে।

ন হি কল্যাণকৃৎ কশ্চিদ্দুর্গতিং তাত গচ্ছতি।।

শ্রীভগবান উবাচ

পার্থ ন এব ইহ ন অমুত্র বিনাশঃ তস্য বিদ্যতে।

ন হি কল্যাণকৃৎ কশ্চিৎ দুর্গতিং তাত গচ্ছতি।।

শ্রীভগবান বললেন – হে পার্থ, যোগভ্রষ্ট ব্যক্তির ইহলোকে, এমনকি পরলোকেও কোন ক্ষতি হয় না। কারণ কল্যাণকারী যোগের প্রচেষ্টায় কোন ব্যক্তিরই দুর্গতি হতে পারে না।

 

৪১

প্রাপ্য পুণ্যকৃতাং লোকানুষিত্বা শাশ্বতীঃ সমাঃ।

শুচীনাং শ্রীমতাং গেহে যোগভ্রষ্টোঽভিজায়তে।।

প্রাপ্য পুণ্যকৃতাং লোকান্‌ উষিত্বা শাশ্বতীঃ সমাঃ।

শুচীনাং শ্রীমতাং গেহে যোগভ্রষ্টঃ অভিজায়তে।।

পুণ্যবানব্যাক্তিরা যে লোকে বাস করেন, যোগভ্রষ্ট ব্যক্তি সেই লোকে বহু বছর বাস করার পর, সদাচারী ও ভাগ্যবান মানুষের ঘরে আবার জন্ম নেন।

 

৪২

অথবা যোগিনামেব কুলে ভবতি ধীমতাম্‌।

এতদ্ধি দুর্লভতরং লোকে জন্ম যদীদৃশম্‌।।

অথবা যোগিনাম এব কুলে ভবতি ধীমতাম্‌।

এতৎ হি দুর্লভতরং লোকে জন্ম যৎ ঈদৃশম্‌।।

অথবা পরমজ্ঞানী সন্ন্যাসীদের বংশেই এঁরা জন্মগ্রহণ করেন। যদিও এই জগতে এই রকম জন্মলাভের ভাগ্য দুর্লভ।

 

৪৩

তত্র তং বুদ্ধিসংযোগং লভতে পৌর্বদেহিকম্‌।

যততে চ ততো ভূয়ঃ সংসিদ্ধৌ কুরুনন্দন।।

তত্র তং বুদ্ধিসংযোগং লভতে পৌর্বদেহিকম্‌।

যততে চ ততঃ ভূয়ঃ সংসিদ্ধৌ কুরুনন্দন।।

 হে কুরুনন্দন, তাঁরা পূর্ব জন্মের পাওয়া সেই জ্ঞানসংযোগ পরজন্মেও লাভ ক’রে থাকেন। এবং পূর্বজন্মের সাধনার ফলে, এই জন্মে সিদ্ধিলাভের জন্যে আরো অনেক বেশী একাগ্র ও একনিষ্ঠ হয়ে থাকেন।

  

৪৪

পূর্বাভ্যাসেন তেনৈব হ্রিয়তে হ্যবশোঽপি সঃ।

জিজ্ঞাসুরপি যোগস্য শব্দব্রহ্মাতিওবর্ততে।।

পূর্ব-অভ্যাসেন তেন এব হ্রিয়তে হি অবশঃ অপি সঃ।

জিজ্ঞাসুঃ অপি যোগস্য শব্দব্রহ্ম অতিবর্ততে।।

তিনি পূর্বজন্মের অভ্যাস বশে স্বভাবতই যোগসাধনে প্রবৃত্ত হন এবং যোগের স্বরূপ উপলব্ধির ইচ্ছায়, যোগসাধনার শুরুতেই, যজ্ঞ অনুষ্ঠানের ফলকে অতিক্রম করতে পারেন। 

  

৪৫

প্রযত্নাদ্‌ যতমানস্তু যোগী সংশুদ্ধকিল্বিষঃ।

অনেকজন্মসংসিদ্ধস্ততো যাতি পরাং গতিম্‌।।

প্রযত্নাৎ যতমানঃ তু যোগী সংশুদ্ধ-কিল্বিষঃ।

অনেক-জন্ম-সংসিদ্ধঃ ততঃ যাতি পরাং গতিম্‌।।

যোগভ্রষ্ট ব্যক্তি পূর্বজন্মের সাধনার থেকেও অনেক বেশী অধ্যবসায় এবং আরো বেশী পবিত্রভাবে সাধনা করলে, বহুজন্মের সাধনার ফলস্বরূপ শেষ পর্যন্ত পরম মুক্তি লাভ করতে পারেন।  

 

৪৬

তপস্বিভ্যোঽধিকো যোগী জ্ঞানিভ্যোঽপি মতোঽধিকঃ।

কর্মিভ্যশ্চাধিকো যোগী তস্মাদ্‌ যোগী ভবার্জুন।।

তপস্বিভ্যঃ অধিকঃ যোগী জ্ঞানিভ্যঃ অপি মতঃ অধিকঃ।

কর্মিভ্যঃ চ অধিকঃ যোগী তস্মাদ্‌ যোগী ভব অর্জুন।।

যাঁরা তপস্যা করেন তাঁদের থেকে এবং শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতগণের থেকেও যোগী শ্রেষ্ঠ। আমার মতে যাঁরা যজ্ঞ অনুষ্ঠান করেন সেই সব কর্মযোগীদের থেকেও যোগী শ্রেষ্ঠ। অতএব হে অর্জুন, তুমি যোগী হও।

 

৪৭

যোগিনামপি সর্বেষাং মদ্গতেনান্তরাত্মনা।

শ্রদ্ধাবান্‌ ভজতে যো মাং স মে যুক্ততমো মতঃ।।

যোগিনাম্‌ অপি সর্বেষাং মদ্গতেন অন্তর-আত্মনা।

শ্রদ্ধাবান্‌ ভজতে যঃ মাং সঃ মে যুক্ততমঃ মতঃ।।

যিনি শ্রদ্ধাযুক্ত মনে, আমাতে চিত্ত সমর্পণ ক’রে, আমার ভজনা করেন, আমার মতে, তিনিই সমস্ত যোগীগণের মধ্যেও শ্রেষ্ঠ।

 

ধ্যানযোগ সমাপ্ত  


চলবে...


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নতুন পোস্টগুলি

পুজোর সেকাল ও মোদের পাড়ার কুকুরগুলো

  পুজোর সেকাল সেবার পুজোয় হায়ার সেকেণ্ডারির দোর গোড়ায় দাঁড়িয়ে আমরা যেন স্পষ্ট অনুভব করতে পারলাম আমাদের হাড় জিরজিরে পিঠের দুপাশে চিকন চিকন ...